করোনায় যেসব উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে যেতে হবে

বাংলাদেশে ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি-কাশি, জ্বর, চিকেন পক্সসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ থাকায় এখন কোনো রোগ হলেই মানুষ ঘাবড়ে যান। তবে ভয় নয় সতর্ক হতে হবে।

মনে রাখতে হবে, জ্বর বা সর্দি-কাশি হলেই করোনা হয়েছে– এমন ভাবা যাবে না। আর এসব রোগের লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালে যেতে হবে এমনও নয়। ঘরে বসে যত্ন নিলে এই রোগ এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।

তবে এখন প্রশ্ন হলো– যদি আপনার করোনার উপসর্গ দেখা দেয় তবে কি করবেন? এই ভাইরাসের উপসর্গ থাকলে প্রথমে ফোনে আইইডিসিআরের নম্বরে পরামর্শ নিতে পারেন। আর যদি সমস্যা গুরুতর হয়, তবে কফের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে।

পরীক্ষা কীভাবে করা হয়?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) নিয়ম হলো– এ পরীক্ষার জন্য রোগীর লালা, শ্লেষ্মা বা কফ সংগ্রহ করতে হবে। নমুনা এমন ল্যাবে পাঠাতে হবে, যেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে, সেই সঙ্গে আছে টেস্ট কিট। বাংলাদেশে কেবল আইইডিসিআরেই এ পরীক্ষা করা সম্ভব।

কীভাবে ছড়ায়?

ড্রপলেট ইনফেকশন অর্থাৎ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। হাঁচি-কাশি কোথাও লাগলে সেখান থেকে ছড়ায়। এ ছাড়া মলমূত্র বা অন্য কোনো দৈহিক রসে ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গ হলো জ্বর ও শুকনো কাশি। এ ছাড়া ডায়রিয়া, দুর্বলতা, ক্লান্তি লাগতে পারে। শুধু এসব উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে না গেলেও চলবে।

কখন হাসপাতালে যাবেন?

১. শুরু থেকেই প্রচণ্ড পেটব্যথা, শ্বাস নিতে কষ্ট, প্রচণ্ড ক্লান্তি আর তীব্র মাথাব্যথা থাকা উদ্বেগজনক।

২. শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, খাবার খেতে বা পানি পান করতে অসুবিধা। মিনিটে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার নির্ণয় করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি ২৪ থেকে ৩০ বার বা তার বেশি হলে সতর্ক হোন।

৩. গবেষকরা বলছেন, এক সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, অসুস্থতা বা অসংলগ্নতা দেখা দিলে দেরি না করে কাছের সরকারি হাসপাতালে যান কিংবা আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।

৪. যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ আছে, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে, কেমোথেরাপি নিচ্ছেন, তারা করোনার সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

৫. যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি বলেছে, স্থূলতা, ফুসফুসের যে কোনো রোগে (যেমন হাঁপানি, ব্রংকাইটিস) ভুগছেন যারা, তারাও ঝুঁকিতে রয়েছেন।

কী করবেন?

১. করোনার উপসর্গ দেখা দিলে সবার থেকে আলাদা থাকতে হবে। আলাদা কক্ষ ও টয়লেট ব্যবহার করুণ। মুখে মাস্ক পরুন, থালাবাটি আলাদা করুন। বিছানাও আলাদা করে ফেলুন।

২. প্যারাসিটামল সেবন করুণ ও প্রচুর পানি পান করুন। এ ছাড়া গরম চা বা পানীয় পান করতে পারেন। জ্বরের জন্য জলপট্টি বা ঠাণ্ডা সেঁক দেয়া যাবে।

৩. উপুড় হয়ে শোবেন, ফুসফুস ভরে শ্বাস নেবেন ও শ্বাস-প্রশ্বাস বাড়ানোর ব্যায়াম করুন।

৪. পুষ্টিকর খাবার খান ও বিশ্রামে থাকুন।

ঢামেক টেলিমেডিসিন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.