বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আন্তঃদেশীয় তদন্তে সাড়া মিলছে না, অসহায় সিআইডি
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় বাংলাদেশ অংশের তদন্ত শেষ হলেও শিগগিরই চার্জশিট দিতে পারছে না সিআইডি। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে রির্জাভ চুরির মামলা ভালোভাবে তদন্ত শেষ করতে ফিলিপাইন, চীন, শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়া সরকারের কাছে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনও ধরনের সাড়া মিলছে না। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তথ্য দিলে তিন মাসের মধ্যে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া সম্ভব বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ফিলিপাইন, চীন, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের তথ্য দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। একারণে ওইসব দেশের অপরাধীদের বিষয়ে তদন্তে তেমন কোনও অগ্রগতি নেই। ফলে এ মামলার চার্জশিট কবে দেওয়া হবে, সে বিষয়টিও অনিশ্চিত।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন,রির্জাভ চুরি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশিদের শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে কার কী ভূমিকা ছিল সেটাও নিশ্চিত হওয়া গেছে।ফিলিপাইনসহ চার থেকে পাঁচটি দেশের কাছে তথ্য চেয়েছি। তারা না বলেনি। কিন্তু তথ্যও দিচ্ছে না। তাই আমরা তাদের তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি। তবে ওইসব দেশ যদি তথ্য নাও দেয়, তারপরও আমরা চার্জশিট দেবো। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন অনেকের নাম থাকবে।
এদিকে, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা মামলায় তদন্ত সংস্থা সিআইডি ৪১তম তারিখেও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য আছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আলোচিত এই মামলার সঙ্গে দেশি-বিদেশি অনেক নাগরিক জড়িত। তাই মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য ৪/৫টি দেশের তথ্য প্রয়োজন। এসব দেশের তথ্য ছাড়া চার্জশিট দিলে সেটা পূর্ণাঙ্গ হবে না। এজন্য বাংলাদেশ অংশের তদন্ত শেষ করেও আমরা চার্জশিট দিতে পারছি না।’
সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে রিজার্ভের অর্থ চুরির এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন।