মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থান কমেছে ৫০%

একদিকে করোনা মহামারি অন্যদিকে জ্বালানির ব্যাপক দরপতনে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে উপসাগরীয় দেশগুলো। এতে বিদেশিদের কর্মসংস্থানের বড় উৎস হয়ে ওঠা এ দেশগুলো এখন নিজেদের নাগরিকদের চাকরি নিয়েই উদ্বিগ্ন। ফলে চাকরি হারিয়ে নিজ দেশে ফিরতে হচ্ছে লাখ লাখ বিদেশি শ্রমিককে।

মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ জবসাইট গালফ টেলেন্ট জানায়, ২০১৯ সাল থেকে এ অঞ্চলে চাকরিতে নিয়োগ ৫০ শতাংশ কমে গেছে। কুয়েতে একটি নতুন আইন অনুমোদনের অপেক্ষায়, যেটি অনুমোদন হলে ২০২০ সালের শেষ নাগাদ ১৫ লাখ বিদেশি শ্রমিককে নিজ দেশে ফিরতে হতে পারে।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রাষ্ট্রীয়ভাবে বেসরকারি কম্পানিগুলোকে বিদেশি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কুয়েত সংসদের স্পিকার মারজুক আল-গানেম বলেন, ‘যারা নিরক্ষর কিংবা সামান্য পরিমাণ পড়তে-লিখতে পারে এসব শ্রমিক এখন আর আমাদের অগ্রাধিকারে নেই।’

সৌদি আরবে জাদওয়া ইনভেস্টমেন্ট কম্পানির দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১২ লাখ বিদেশি শ্রমিককে এ বছর নিজ দেশে ফিরতে হবে। করোনায় অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দেশটি।

আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউট ইন ওয়াশিংটনের আবাসিক স্কলার ড. রবার্ট মগিলনিকি বলেন, ‘উপসাগরীয় দেশগুলোতে এ মুহূর্তে কম দক্ষ শ্রমিকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা বেশি। যাদের যথেষ্ট দক্ষতা আছে তারা হয়তোবা এ সংকটে কোনো না কোনোভাবে টিকে যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থান সীমিত হয়ে আসায় আরবে এখন জাতীয়করণের প্রভাব তৈরি হয়েছে, অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশি শ্রমিকদের বাদ দিয়ে দেশি কর্মী নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

গালফ টেলেন্ট আরো জানায়, শুধু কর্মসংস্থানই কমছে না, মজুরিও উল্লেখযোগ্যহারে কমছে। করোনা মহামারির আগে যে মজুরি পাওয়া যেত এখন কাজ করলে তার চেয়ে অনেক কম মজুরি দেওয়া হচ্ছে। ওমানের স্বাস্থ্য খাতে কাজ করা বিদেশি শ্রমিকরা গত ফেব্রুয়ারি থেকেই চাকরির ঝুঁকিতে পড়েছে।

স্থানীয় পত্রিকা জানায়, দেশটির সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে টেকনিক্যাল পর্যায়ে কোনো বিদেশি নেওয়া যাবে না, দেশীয় লোক নিয়োগ করতে হবে।

সূত্র : আরব নিউজ, গালফ নিউজ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.