গেম অব থ্রোনসের অজানা তথ্য

downloadগত অ্যামি অ্যাওয়ার্ডের ৬৭তম আসরে ১২টি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পাওয়ার মধ্যে দিয়ে নিজের তৈরি আগের রেকর্ডটি ভেঙ্গেছিল জনপ্রিয় ও ব্যয়বহুল টিভি সিরিজ গেম অব থ্রোনস।

তাই গেম অব থ্রোনস নিয়ে ভক্তদের প্রতীক্ষা ও উন্মাদনা সবসময়ই একটু অন্যরকম। গত সিজনে জন স্নোর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গেম অব থ্রোনসের উন্মাদনা দেখা যায়।

শুধু তাই নয় এই উন্মাদনায় নতুন হাওয়া লাগে যখন ইংল্যান্ডের রাণী গেম অব থ্রোনসের সেটে উপস্থিত হন। তাই কিছুটা হলেও এর জনপ্রিয়তা আঁচ করা যায়। আগামী ২৪ এপ্রিল মুক্তি পেতে যাচ্ছে গেম অব থ্রোনসের সিজন ছয়। এ নিয়েও উচ্ছ্বাসের কমতি নেই ভক্তদের মাঝে।

১৯৯৬ সালে প্রকাশিত আমেরিকান বিখ্যাত উপন্যাসিক জর্জ রায়মন্ড রিচার্ড মারটিন’র বিখ্যাত ফ্যান্টাসি উপন্যাস সিরিজ ‘এ সং অব আইস অ্যান্ড ফায়ার’ এর উপর ভিত্তি করে একটি ফ্যান্টাসি এপিক টিভি সিরিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন। নিউইর্য়ক ও শিকাগোর দুই বিখ্যাত নির্মাতা ডেভিড বেনিয়ফ ও ডি বি উইস ২০১০ সালের ২ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

গেম অব থ্রোনসের গল্পটি মূলত ১৪৫৫-১৫০০ সালের মধ্যবর্তী সময়কার। সাতটি রাজ্যের সিংহাসনের লড়াই মূলত এই সিরিজের উপজীব্য। যেখানে প্রত্যেকটি রাজ্যের আলাদা ধরনের যুদ্ধকৌশল এবং যুদ্ধদর্শন রয়েছে। গেম অব থ্রোনসে উঠে এসেছে তৎকালীন সময়ে রাজ দরবারে ঘটে যাওয়া সূক্ষ্মতিসুক্ষ্ম সব ঘটনা। বিভিন্ন রাজ্যের ভেতরকার উন্মাদনা, মনস্তাত্ত্বিক লড়াই এবং সিংহাসন দখল করার বিভিন্ন ঘটনার উপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাচ্ছে গেম অব থ্রোনস। তাই দর্শকদের মধ্যে সবসময়ই তাড়া করে কি হতে যাচ্ছে আগামীতে। এ জন্য দর্শকরাও আগামী ২৪ এপ্রিলের জন্য অপেক্ষা করছেন।

গেম অব থ্রোনসের এ পর্যন্ত পাঁচটি সিজন রয়েছে। প্রত্যেকটি সিজনে রয়েছে দশটি করে পর্ব। প্রত্যেক পর্বের গড় দৈর্ঘ্য ৬০ মিনিট। এর প্রথম সিজন মুক্তি পায় ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯ জুনের মধ্যবর্তী দিনগুলোতে। দ্বিতীয় সিজন ২০১২ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩ জুন, তৃতীয় সিজন ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ থেকে ৯ জুন, চতুর্থ সিজন ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন, পঞ্চম সিজন মুক্তি পেয়েছিল গত বছর ১২ এপ্রিল থেকে ১৪ জুনের মধ্যবর্তী সময়ে।

সময়ের ধারাবাহিকতায় এ বছর মুক্তি পাবে গেম অব থ্রোনসের সিজন ছয়। গেম অব থ্রোনসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ইতোমধ্যে সে সময়সীমা জানানো হয়েছে, উল্লেখিত সময় হলো- ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন। সিজন ছয়ে রয়েছে মোট দশটি পর্ব।

তবে গেম অব থ্রোনসে জর্জ আর মার্টিনের উপন্যাসের ঠিক সেই সময় ধরতে পেরে প্রশংসিত হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী বেনিয়ফ এবং ৪৪ বছর বয়সী বি উইস।

পৃথিবীর অসাধারণ সব লোকেশন খুঁজে বের করে সেসব জায়গায় চিত্রধারণের কাজ করেছেন নির্মাতারা। গেম অব থ্রোনসের প্রথম শুটিং অনুষ্ঠিত হয় উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে। এই পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া, মাল্টা, আইসল্যান্ড, মরক্কো, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, স্কটল্যান্ড, কানাডা, দুই আমেরিকা মহাদেশসহ পৃথিবীর একাধিক দেশে চিত্রায়ণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭জন পরিচালকের সহায়তায় নির্মিত হয়েছে পাঁচটি সিজনের পঞ্চাশটি পর্ব। অধিকাংশ কস্টিউম নির্মিত হয়েছে জাপানিজ এবং পার্সিয়ান সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে। এতে অভিনয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার একঝাঁক অভিনয়শিল্পী। এ পর্যন্ত গেম অব থ্রোনসে তালিকাভুক্ত অভিনয়শিল্পীর সংখ্যা ২৫৭ জন।

বাজেটের দিক থেকেও গেম অব থ্রোনস নতুন রেকর্ড গড়েছে। তৃতীয় সিজন পর্যন্ত এর প্রতি পর্বে বাজেট ছিল ৫-৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, চতুর্থ এবং পঞ্চম সিজনে ছিল ৬-৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিজন ছয়ের প্রতি পর্বে নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা পৃথিবীর অন্য যে কোনো টিভি সিরিয়ালের তুলনায় বহুগুণে বেশি। সম্পূর্ণ ব্রিটিশ ইংরেজিতে নির্মিত গেম অব থ্রোনস এ পর্যন্ত আয় করেছে ৪.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রচারের দিক থেকেও এগিয়ে এই সিরিজটি। গেম অব থ্রোনস পৃথিবীর আটটি বিখ্যাত টিভি চ্যানেলে অফিশিয়ালভাবে সম্প্রচারিত হয়। এর মধ্যে আমেরিকার এইচবিও; অস্ট্রেলিয়ার শো কেস; কানাডার এইচবিও, সুপার একরান, নিউজিল্যান্ডের সোহো এবং প্রাইম, ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের স্কাই আটলান্টিক উল্লেখযোগ্য।

তবে চলতি মাসের ২৪ তারিখে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিজন ছয় প্রচার করবে কয়েকটি অনলাইন টিভি, এমনটাই জানিয়েছে গেম অব থ্রোনসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। এর মধ্যেই মুক্তির সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলেও জানা গেছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.