এভিয়েশন নিউজ: ‘টক শো’ খ্যাত টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব এবং ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী নিউইয়র্কের একটি বাংলা ভাষাভাষি টিভি চ্যানেলকে বাংলাদেশের কোনো খবর প্রচার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের খবর দেখলে মানুষ অসুস্থ হবে। কারণ সেখানে খুন খারাবী নিত্য দিনের ঘটনা। তিনি আরো বলেন, প্রবাসে অনেক ভালো খবর আছে যেগুলো মানুষ দেখতে চায়। বরং এখানকার ভালো খবর প্রচার করলে প্রবাসে বাংলাদেশীদের মধ্যে জাগরণ তৈরি হবে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের এস্টোরিয়া ওয়ার্ল্ড ম্যানরে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে মূলধারায় বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ‘টাইম টেলিভিশন’ এর আনুষ্ঠানিক সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে মার্কিন কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরি ও অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে রিমোর্ট টিপে সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মতিউর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের জনক ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভিডিও বার্তায় টাইম টেলিভিশনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা এবং এর সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এবং অন্যটি মিডিয়া। তিনি বলেন, যে দেশে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেই দেশ এগোতে পারে না। সমাজকে এগিয়ে নিতে ভিন্নমতের প্রকাশ থাকতেই হবে। তিনি বলেন, আমি যে কোনো মতে বিশ্বাস করতেই পারি, কিন্তু আমাকে কথা বলতে দিতে হবে। তিনি বলেন, কটুক্তি করার জন্য যেখানে সাত বছরের জেল হতে পারে সেই সমাজে কথা বলবো কী করে? আমি কারো বিরুদ্ধে বলছি না। আর বলতে চাই না এ কারণে যে এটা একদিনে তৈরি হয়নি। তবে বাংলাদেশে সেল্ফ সেন্সরশিপ চালু রয়েছে বলে জানান তিনি।
টিভি ব্যক্তিত্ব এই সাংবাদিক আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্টেও সব কথা বলা যায় না। আমরা অনেক কথাই বলে ফেলি, কিন্তু দায়িত্বশীল হই না। টেলিভিশন টকশো করার সময় আমাকে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। তিনি বলেন, টকশো আজকাল দলীয় প্যাটার্নে পরিণত হয়েছে। টকশো হতে হবে বিবেকের কণ্ঠস্বর, জনগণের কণ্ঠস্বর। আমেরিকায় যারা ভালো করছেন তাদের টকশোতে হাজির করার জন্য তিনি টাইম টিভিকে পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশের মিডিয়া ব্যাপক বিকশিত হয়েছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মিডিয়া আজকে একটি স্বাধীন মিডিয়া হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে বিপা এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এসআই টুটুল। সবশেষে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন নিউইয়র্কের জনপ্রিয় শিল্পী রাজিব রহমান, শাহ মাহবুব, জিনাত রেহানা রত্মা, তানভির শাহীন, শামীম সিদ্দিকী, চন্দ্রা ও নওরীন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন টাইম টিভির সংবাদ পাঠক সাদিয়া খন্দকার ও সাংবাদিক শাহাদাত সবুজ এবং সংস্কৃতি কর্মী সেমন্তি ওয়াহেদ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে টাইম টিভিকে প্রোক্লেমেশন প্রদান করা হয়।
– বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে