যশোরের মণিরামপুর থেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে বগুড়ায় নিয়ে যাওয়া এক প্রবাসীর স্ত্রীকে উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে যশোর ডিবি পুলিশ। আটককৃতদের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ও ২ ভরি সোনার গহনাও উদ্ধার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধামাচামা গ্রাম থেকে আসামিদের আটক ও ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। আটককৃতর হলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধামাচাপা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে জুয়েল আহমেদ, একই গ্রামের ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও তার ভাই মামুন-উর-রশীদ। আটককৃতদের শুক্রবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত উদ্ধার হওয়া গৃহবধূ রিমা খাতুনকে পরিবারের জিম্মায় এবং আটককৃতদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
যশোর ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহমেদ শনিবার দুপুরে জানান, মণিরামপুর উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমান গাজীর স্ত্রী রিমা খাতুনের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার ধামাচাপা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে মালয়েশিয়াপ্রবাসী সোহেল রানা। হাফিজুর-রিমা দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।
গত ১ জুন স্বামীর বাড়ি থেকে হটাৎ নিখোঁজ হন রিমা খাতুন। পরে তার পরিবারের লোকজন জানতে পারে সোহেলের নির্দেশে তার ছোট ভাইসহ কয়েক সহযোগী মণিরামপুর এসে রিমাকে মাইক্রোবাসযোগে নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় রিমা তার স্বামীর পাঠানো ৩৬ লাখ টাকা ও ১২ ভরি ওজনের সোনার গয়না নিয়ে যান। এ ঘটনায় গত ১৬ জুন রিমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন মণিরামপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন।
এরপর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম ও আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার ভোরে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধামাচাপা গ্রামের সোহেল রানার ভাই জুয়েলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রিমা খাতুনকে উদ্ধার করে ডিবির একটি টিম।
একই সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৬ লাখ টাক ও দুই ভরি সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়। ওই সময় গৃহবধূকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জড়িত জুয়েল আহমেদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও মামুন উর রশিদ নামে তিনজনকে আটক করা হয়। তিনি আরো বলেন, আসামিরা টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতানোর উদ্দেশে রিমা খাতুনকে কৌশলে বগুড়া নিয়ে তাকে আটকে রাখে।
তিনি আরো জানান, শুক্রবার বিকেলে রিমা খাতুন ও আটক তিন আসামিকে যশোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদি হাসানের আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় রিমা খাতুন দণ্ডবিধির ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া আটক তিন আসামি আদলতে অপহরণের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে আদালত রিমা খাতুনকে তার পরিবারের হেফাজতে এবং আসমিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।