জাল ভিসায় ধূম্রজাল

libya-workvisaচলতি মাসের প্রথম দিকে লিবিয়ার ত্রিপোলির মিতিগা বিমানবন্দরে জাল ভিসা নিয়ে ধরা পড়া ৩৬ বাংলাদেশি দাবি করেছিলেন, ঢাকায় লিবিয়া দূতাবাস থেকেই তাঁরা ওই ভিসা পেয়েছেন। তবে ঢাকায় লিবিয়া দূতাবাস এ দাবি নাকচ করে  বলেছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা কোনো ভিসাই ইস্যু করেনি। মানবপাচারকারী চক্র ভিসা জাল করে তা লিবিয়া দূতাবাস থেকে ইস্যু করা হয়েছে বলে দাবি করছে।
ঢাকায় লিবিয়া দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এম এম এম সালাবি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, তাঁর দূতাবাস গত সেপ্টেম্বর মাসের পর আর কোনো ভিসা ইস্যু করেনি। এর আগেও যে ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল সেগুলোর মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে।
লিবিয়ায় ঢুকতে গিয়ে জাল ভিসা নিয়ে ধরা পড়া বাংলাদেশিরা ওই ভিসা কোথায় পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিবিয়া দূতাবাস ওই ভিসা দেয়নি। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে নানা চক্র ভিসা জাল করছে। বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়ে অবগত।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, জাল ভিসা নিয়ে বাংলাদেশিদের লিবিয়ায় ধরা পড়ার ঘটনায় ওই দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস ঢাকায় লিবিয়া দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করে সমস্যাটি তুলে ধরেছে। লিবিয়া দূতাবাস ওই ভিসাগুলো তারা করেনি বলেই দাবি করছে।
তবে লিবিয়ায় যে বাংলাদেশিরা জাল ভিসা নিয়ে ধরা পড়েছেন তাঁদের কাছে বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র/স্মার্টকার্ড ছিল না। এটি ছাড়া কর্মসংস্থান ভিসা (এমপ্লয়মেন্ট ভিসা) পাওয়ার সুযোগ নেই। তা ছাড়া বাংলাদেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরগুলোর ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্যও শ্রমিকদের স্মার্টকার্ড থাকতে হয়। কিন্তু এটি ছাড়াই ওই ৩৬ জন জাল ভিসায় বাংলাদেশ ছেড়েছেন।
নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ সরকার গত বছর বাংলাদেশিদের লিবিয়া সফরে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তা এখনো বহাল রয়েছে। এমনকি লিবিয়ার ত্রিপোলিস্থ সরকারও গত বছর মে মাসে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া নিষিদ্ধ করে।
সংঘাতময় লিবিয়ায় বর্তমানে অঞ্চলভিত্তিক একাধিক সরকার রয়েছে। ঢাকাস্থ লিবিয়া দূতাবাস ত্রিপোলিস্থ সরকারের সঙ্গে আছে। সরকারিভাবে লিবিয়া সফরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ রয়েছে। এমনকি লিবিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তাকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ কারণেই লিবিয়ার নিরাপত্তা ঝুঁকিকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.