কত কিছুই না ঘটে সেলুলয়েডের পর্দা থেকে বাস্তব জীবনে। আর তারকা হলে তো কথাই নেই, যা ঘটে তার থেকে রটে যেন একটু বেশিই। বিশেষ করে তারকাদের প্রেম কাহিনির আলোচনা, অল্পতেই যেন সরগরম। যাই হোক, বিভিন্ন দেশের তারকাদের মতো বলিউডের তারকাদের প্রেমের কাহিনি নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ভক্তদের মধ্যে। তবে সময়ে সময়ে দেখা গিয়েছে অনেক তারকাই জীবনেেই রয়েছে ত্রিভুজ প্রেমের গল্প। বলিউডের এমন তারকাদের দশ ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।
রেখা-অমিতাভ-জয়া : রেখা এবং অমিতাভের প্রেম কাহিনি কে না জানে। ‘দো আনজানে’ সিনেমার শুটিং-এর শুরু থেকেই বলিউড পাড়ায় রটে গিয়েছিল প্রেমে মেতেছেন অমিতাভ-রেখা। পরে অবশ্য সেটা সত্যই প্রমাণ হয়েছিল। তারা একটানা প্রেম করেছিলেন বেশ কিছুদিন। কিন্তু ‘সিলসিলা’ সিনেমার শুটিং থেকেই যেন তাদের প্রেমে টানাপোড়েন শুরু হয়। তাদের সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়ে জয়া। পরবর্তীতে অবশ্য জয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে অমিতাভ বচ্চনের। এবং এই জয়াকেই বধূ হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। উল্লেখ্য, ‘সিলসিলা’ সিনেমায় অমিতাভ, জয়া, রেখা ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন সঞ্জীব কুমার, শশী কাপুরের মতো অভিনেতারা।
দীপিকা-রণবীর-ক্যাটরিনা : রণবীর কাপুরের সঙ্গে দীপিকার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল মূলত বন্ধুত্ব থেকেই। ‘বচনা অ্যায় হাসিনো’ সিনেমায় সর্বপ্রথম তাদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেখান থেকেই প্রেম। কিন্তু দু বছরের মতো স্থায়ী ছিল তাদের প্রেম। এরপর ক্যাটে মাতেন রণবীর। ‘আজব প্রেম কি গজব কাহানি’ সিনেমার সেট থেকে শুরু হয় রণবীর-ক্যাটের প্রেমের গুঞ্জন। আর রাজনীতি সিনেমার সেটে সেটা পেয়েছিল প্রাপ্তি। কিন্তু সবকিছু ছেড়েছুড়ে বর্তমানে নাকি সিঙ্গেলই রয়েছেন রণবীর এবং ক্যাট।
শহিদ-কারিনা-সাইফ : কারিনার খুব ভালো বন্ধু ছিলেন নাকি শহিদ, তাদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় যত গুঞ্জনই উঠেছে কোনটিতেই তেমন কান দেননি তারা। সবার ধারণা বেশ কিছুদিনের জন্য তারা প্রেমে জড়িয়েছিলেন। তবে এই সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।পরবর্তীতে ‘তাশান’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে সাইফ আলী খানের প্রেমে জড়িয়ে পড়েন কারিনা। এরপর অবশ্য কয়েক বছর বছর চুটিয়ে প্রেম করে অবশেষে বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই বিয়ে করেছেন সাইফ-কারিনা।
হারমান-প্রিয়াঙ্কা-শহিদ : ভারতীয় অভিনেতা এবং বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী হারমান বাওয়েজার বিপরীতে ২০০৮ সালে ‘লাভ স্টোরি-২০৫০’ সিনেমায় কাজ করার এক ফাঁকে প্রেমে মাতেন প্রিয়াঙ্কা-হারমান। কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয়নি এই সম্পর্ক, ২০০৯ সালে ‘কামিনে’ সিনেমার শুটিং সেটে শহিদের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। অবশ্য এই সম্পর্কও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
অভিষেক-কারিশমা-সঞ্জয় : বিয়ে করবেন এমন প্রতিজ্ঞা করেই যেন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অভিষেক-কারিশমা। সেজন্যই হয়তো তাদের বিচ্ছেদ ঘটানো একটু কষ্টকর ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন অভিষেক ঐশ্বরিয়াকে বিয়ে করেন তারপর নতুন প্রেমের সম্পর্কে জড়ান কারিশমা। শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে সেই সম্পর্ক অবশেষে বিয়েত পর্যন্ত গড়ায়।
সালমান-ঐশ্বরিয়া-বিবেক : সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালের ১৮ই জুন। এই সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করতে গিয়ে বলিউড ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত প্রেমে মাতেন সালমান খান এবং ঐশ্বরিয়া রাই। কিন্তু ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাম তুমহারে হ্যায় সানাম’ সিনেমার পর থেকেই দুজনের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপর গুঞ্জন ওঠে, অভিনেতা বিবেকের সঙ্গে নাকি প্রেমে মেতেছেন ঐশ্বরিয়া। কিন্তু সে গুঞ্জনও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
জেরিনা-আদিত্য-কঙ্গনা : ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই নিজের অবস্থান তৈরি করার জন্য বেশ কষ্ট করতে হয়েছে কঙ্গনা রাণৌতকে। শুধু তাই নয়, এর জন্য নাকি বেশ কয়েকবার কঠিন দাম দিতে হয়েছে তাকে! তবে এর মাঝেও নিজের থেকে বিশ বছরের বড় আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে নাকি প্রেমে মজেছিলেন তিনি। তবে সেসময় অবশ্য আদিত্য বিবাহিত ছিলেন। কঙ্গনার সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে আদিত্যের স্ত্রী জেরিনা ওয়াহাবের কারণেই এই সম্পর্কের অবসান ঘটেছিল। উল্লেখ্য, বর্তমানে কঙ্গনা বলিউডের অন্যতম দামী অভিনেত্রী। পরপর দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কারে সেরা অভিনেত্রীর খেতাব জিতে চলচ্চিত্র বোদ্ধাদেরকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
দিনো-বিপাশা-আব্রাহাম : ভারতীয় মডেল দিনো মরেয়ার সঙ্গে বেশ দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক ছিল বিপাশা বসুর। কিন্তু ‘জিসম’ সিনেমা শুটিং করতে গিয়েই নতুন প্রেমে অবগাহন করে ফেলেন বিপাশা। দিনোকে ছেড়ে জন আব্রাহামে মাতেন তিনি। এরপর অবশ্যই আব্রাহামের সঙ্গে প্রেমের কথা স্বীকার করেছিলেন বিপাশা। একসঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু হিট সিনেমাও উপহার দিয়েছিলেন দর্শকদের। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আর সামনে এগোতে পারেনি এই জুটি। বেশ কিছু বছর ধরেই দূরে আছেন জন আব্রাহাম এবং বিপাশা বসু।
শিল্পা-অক্ষয়-টুইংকেল : ‘মে খিলাড়ি তু আনারি’ সিনেমা যে শুধু বক্স অফিস সাফল্য পেয়েছিল তা নয়। এর সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণতা পেয়েছিল শিল্পা এবং অক্ষয়ের প্রেম কাহিনি। তারা দুজনেই প্রকাশ করেছিলেন তাদের সম্পর্কের কথা। দুজনেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিবাহের। কিন্তু মাঝখানে টুইংকেল খান্না এসে যেন সব লণ্ডভণ্ড করে ফেললেন। অক্ষয় এবং শিল্পার প্রিয় বন্ধু টুইংকেলের সঙ্গেই অবশেষে অক্ষয় বিবাহে আবদ্ধ হন।
সালমান-ক্যাটরিনা-রণবীর : ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ম্যায়নে পেয়ার কিউ কিয়া’ থেকে শুরু করে ২০০৮-এর ‘যুবরাজ’ পর্যন্ত সম্পর্কে ছিলেন সাল্লু-ক্যাট। বেশ কয়েকবার তাদের বিয়ের গুঞ্জনও রটে। কিন্তু এর মধ্যে ‘আজব প্রেম কি গজব কাহানি’ সিনেমায় রণবীরের বিপরীতে কাজ করতে গিয়ে তার সঙ্গে শুরু হয় ক্যাটরিনার নতুন প্রেম। বেশকিছুদিন হলো সে সম্পর্কেও ভাটা পড়েছে। বর্তমানে নাকি একে অন্যের মুখ দেখছেন না তারা। অন্যদিকে ক্যাটরিনা নাকি এখনো সালমানের ভালো বন্ধু হয়েই আছেন।