চেন্নাই বিমানবন্দরে ঢাকাগামী ফাইটে যাত্রী হয়রানি ভোগান্তি

maldian airমালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের ঢাকাগামী ফাইটের প্রায় অর্ধশত যাত্রী ভারতের চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চরম হয়রানি ও ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিডিউল বিপর্যয়, সময়মতো খাবার না দেয়াসহ নানা দুর্ভোগে পড়ে একপর্যায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন চিকিৎসা নিতে যাওয়াসহ বিভিন্ন পেশার যাত্রীরা।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ওই ফাইটে দেশে ফেরা একাধিক যাত্রী এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের ফাইটে কোনো ডিসিপ্লিন ছিল না। অথচ এসব বিষয় শাহজালাল বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল কারো চোখে পড়ে না। তারা বলছেন, এই রুটে যাত্রী অনেক। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্স সপ্তাহে দু’টি করে ফাইট পরিচালনা করে তারপরও যাত্রীর অভাব হবে না বলে তারা মনে করছেন।
এর আগে একইভাবে চেন্নাইগামী ফাইটে উঠতে গিয়ে দেড় শতাধিক যাত্রীকে ঢাকায় তিন দিন চরম হয়রানি ও ভোগান্তি পোহাতে হয়।
গতকাল শুক্রবার ১২টা ৩৫ মিনিটে চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফাইটের অপেক্ষায় থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের শিডিউল ফাইটটি (কিউ২-৫৫০) ঢাকার উদ্দেশ্য দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা। কিন্তু এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বিমান দেরি করে ছাড়ার কোনো ঘোষণা না দিয়েই সেটি স্থানীয় সময় ২টা ৫০ মিনিটে নির্ধারণ করে। পৌনে ২ ঘণ্টা বিলম্ব হলেও এ সময়ে যাত্রীরা খাবার দাবি করলেও এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো খাবার দেয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, তারা যাত্রীদের সাথে কথাই বলতে চায় না। এক যাত্রী এ নিয়ে কথা বলতে গেলে উল্টো তাকে বলা হয়, আপনি অফিসে এসে কথা বলেন। তারা বলছে, অন বোর্ডে যাত্রীদের খাবার দেবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বেলা একটার ফাইট ধরার জন্য ৪০-৪৫ জন যাত্রী সকাল ১০টার মধ্যে বিমানবন্দরে এসে পড়েন। তারা এসে জানতে পারেন শিডিউল বিপর্যয়ের কথা। তিনি বলেন, এই ফাইটে চিকিৎসা নিতে আসা যাত্রীরাও রয়েছেন।
সন্ধ্যা ৬টায় ওই ফাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ুব্ধ ওই যাত্রী বলেন, মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের এই ফাইটে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফাইট শিডিউল ২টা ৫০ মিনিটে থাকলেও তা ছাড়েনি। ৩টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। প্লেনে খাবার দেয়নি, চেন্নাই বিমানবন্দরেও তারা খাবার দেয়নি। প্যাসেঞ্জারের কাছে এইটা চায়, ওইটা চায়। প্লেনের ভেতরও যাত্রীদের ভোগান্তির কমতি ছিল না। প্যাসেঞ্জাদের জ্বালাইয়া খাইছে! তারপরও প্যাসেঞ্জাররা ভদ্র ছিল, তারা চুপ করে বসেছিল। টুঁ শব্দও করেনি। আমাকে বিমানবন্দরে বলেছিল প্লেনে উঠলে লাঞ্চ দেবে। কিন্তু দিছে দুই পিস রুটি আর শুকনো মুরগি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা-চেন্নাই রুটে প্রচুর যাত্রী রয়েছে। সপ্তাহে দু’টি ফাইট চলাচল করলেও যাত্রীর অভাব হবে না।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে (শুক্রবার) মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের একই ফাইটে চেন্নাই যাওয়ার সময় শাহাজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীরা জানতে পারেন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফাইটটি যথাসময়ে ছেড়ে যাবে না। পরে বিমানবন্দরে একইভাবে খাবার না দিয়ে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার ডাবল ট্রি হোটেলসহ দু’টি হোটেলে। পরদিন সকালে ফাইট শিডিউল ঠিক করা হলেও সেদিনও ওই ফাইটটি ছেড়ে যেতে পারেনি।
এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের ডিউটি ম্যানেজার রেহনুমার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে চেন্নাইগামী ফাইটের যাত্রীদের হয়রানি ও ভোগান্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে তখন তিনি বলেছিলেন, আমরা প্রত্যেক যাত্রীর সাথে টেলিফোনে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তাদের হোটেলে নেয়া ও খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরপরও যারা যেতে চাইবে না তারা টিকিট রিফান্ড করতে পারবেন।

সূত্রঃ নয়া দিগন্ত

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.