এভিয়েশন নিউজ: এশিয়ার নিকৃষ্টতম বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অবস্থান নবম। এশিয়া এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিমানবন্দরের স্থানটি পেয়েছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ বেনজীর ভুট্টো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
এক জরিপে ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো সুবিধা ও সেবার মান নিয়ে আকাশপথে ভ্রমণ করা যাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে বিমানবন্দরগুলোর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে। নিউইয়র্ক স্লিপিং ইন এয়ারপোর্ট নামের একটি সংস্থা এ জরিপটি পরিচালনা করে।
ওই জরিপের ফল অনুযায়ী ইসলামাবাদের পর শাহজালালের আগ পর্যন্ত এশিয়ার অন্যান্য নিকৃষ্ট বিমানবন্দর হচ্ছে যথাক্রমে নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দর, ফিলিপাইনের ম্যানিলা নিনয় অ্যাকুইনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ভিয়েতনামের হ্যানয় নই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চীনের গুয়ানজুবাইযু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কম্বোডিয়ার পনোম ফেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি তেন সন থাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দশম স্থানে রয়েছে ভারতের চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরটিরতে হট্টগোল বেশি। কার্যক্রম খুব ধীরগতির এবং বিমানবন্দরের ভেতরে মশা-মাছির উৎপাত রয়েছে। ঢাকায় চার বছর ধরে অবস্থান করছেন এমন একজনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এই বিমানবন্দরের বেশিরভাগ ফ্লাইট যথাসময়ে ছেড়ে যায় না, দেরি হয়। কোনো ফ্লাইট নামলে লাগেজ পেতে যাত্রী ২৯৩ ঘণ্টাও অপেক্ষা করতে হয়।
এটি চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য। এই বিমানবন্দরের সিকিউরিটি ব্যবস্থা খুবই খারাপ। বিমানবন্দরের চারদিকে চেক পোস্টগুলোতে কোনো সিকিউরিটি গার্ড নেই। এসব চেক পোস্ট গরু-ছাগলের আস্তানা। বিমানবন্দরের চারদিকে যে সীমানা প্রাচীর আছে তার অনেকাংশ অরক্ষিত। এসব সীমানা প্রাচীর ডিঙিয়ে যে কেউ বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারে। মানুষ ছাড়াও বিমানবন্দরটি গরু, ছাগল ও পাখির অভয়ারণ্য। যার কারণে প্রায় সময় বিমানে বার্ড হিটের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া বিমানবন্দরটিকে কিছুদিন আগে আওইকাও সিগনিফিকেন্ট সেফটি কনসার্নের (এসএসসি) তালিকায় রেখেছিল। দীর্ঘ ৩/৪ বছর পর আইকাও শাহজালালকে এসএসসির তালিকা থেকে বাদ দেয়। শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সিভিল এভিয়েশনের কোনো অর্গানোগ্রাম নেই।
এখানে বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা শীর্ষ পদগুলো দখল করে আছেন। যার কারণে এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা তৈরি হতে পারে না। কোন ধরনের অনুমোদন না থাকার পরও বিমানবন্দরের ভেতরে (যেখানে যাওয়ার অনুমতি নেই) বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (বিএপিবিএন) নামে একটি বাহিনীর সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থায় চলাফেলা করছে।
শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম খুবই খারাপ। রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স সংস্থা এই গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই এয়ারলাইন্সে রয়েছে চারটি শ্রমিক ইউনিয়ন। এরা কোনো কাজ করে না। কথায় কথায় বিমানবন্দরের ভেতরে-বাইরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম বন্ধ হরে দেয়। অচল করে দেয় বিমানবন্দর।
কথায় কথায় ধর্মঘট ডাকে। দেশী-বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো গ্রান্ড হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম ধীর গতিতে হওয়ায় যথা সময়ে ফ্লাইট চালাতে পারছে না। নিজেদের লোকবল দিয়ে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম করলেও তাদের বিমানকে টাকা দিতে হয় এ জন্য।