বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করলো পিপল এন টেক

People-n-Techএভিয়েশন নিউজ: যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইটি প্রতিষ্ঠান পিপল এন টেক আমেরিকা, কানাডা এবং ভারতের পর এবার বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। রাজধানীর গ্রীনরোডের গুডলাক সেন্টারে শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, পিপল এন টেক যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর কর্মসংস্থানের সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ শুরু করেছে।

পিপল এন টেকের বাংলাদেশ অফিস সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব কাজের চাহিদা বেশি সেগুলোকে এ দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাধান্য দিয়ে ভর্তি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সফটওয়্যার টেস্টিং, বিজনেস অ্যানালিস্ট, ডেটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং বেসিক কম্পিউটার কোর্স উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ওরাকল সার্টিফিকেট প্রফেশনাল কোর্স, বহির্বিশ্বের আউটসোর্সিং ভিত্তিক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডেস্কটপ ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এবং যারা অনলাইনে আউটসোর্সিং করেন তাদের জন্য বিনামূল্যে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে কয়েক হাজার বাংলাদেশি পিপল এন টেক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সে দেশের মূলধারার বড় কোম্পানিগুলোতে চাকরি করছেন।

সম্প্রতি পিপল এন টেকের এসব কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়ান-আমেরিকান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. নীনা আহমেদ। যা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে। এবার বাংলাদেশ থেকে সরাসরি এমন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করতে কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন ভিসার প্রক্রিয়াধীন বাংলাদেশিরা দেশ ত্যাগের আগেই এখান থেকে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স টেস্টিং কোর্সে গ্রাজুয়েট হয়ে আমেরিকায় অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া যেসব বাংলাদেশিদের ইমিগ্রেশন ভিসা প্রাপ্তির সুযোগ নেই, কিন্তু আইটি খাতে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে আমেরিকা গমনে ইচ্ছুক তাদের জন্য পিপলস এন টেক এইচওয়ানবি ভিসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থীকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর অথবা অন্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং আইটি খাতে কমপক্ষে ৩ বছরের বাস্তবিক কাজে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে পিপল এন টেকের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আবু বকর হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবার এইচওয়ানবি ভিসায় ১ লাখ ৮০ হাজার নতুন ইমিগ্র্যান্ট নেবে। প্রতিবছরের চেয়ে এই সংখ্যা তিনগুণ। বাংলাদেশের যত বেশি সংখ্যক আইটি প্রশিক্ষিত আবেদনকারী থাকবে, সম্ভাবনাও তত বেশি হবে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এরই মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্সে শিক্ষা নিয়েছেন তাদের জন্য এই শর্ট-টার্ম কোর্সটি সোনায় সোহাগা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিপল এন টেকের যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে। এরপর প্রতিষ্ঠানটি কানাডা এবং ভারতেও তাদের শাখা অফিস সম্প্রসারণ করে। অবশেষে চলতি বছর বাংলাদেশেও অফিস খোলার বিষয়ে ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়ার পর ২০০৬ সালের মধ্যেই ৩ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয় পিপল এন টেক থেকে। ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু করে। ২০১১ সালে আমেরিকার গণ্ডি পেরিয়ে প্রথম অফিস খোলা হয় কানাডাতে। ২০১২ সালে ভারতেও অফিস চালু করা হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে চতুর্থ দেশ হিসেবে পিপল এন টেকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তী শাখা অফিস চালু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে অনলাইনেও ক্লাস করছে কানাডা, যুক্তরাজ্য, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ছাড়াও আমেরিকার বহু রাজ্যের শিক্ষার্থীরা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.