এভিয়েশন নিউজ: জানুয়ারি থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে। এজন্য শিগগির বিমানের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে ড্রাই লিজ চুক্তিতে আনা দুটো টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, কানাডার বোম্বাডিয়ার কোম্পানির তৈরি ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ মডেলের দুটি উড়োজাহাজ মিসরভিত্তিক স্মার্ট এভিয়েশন থেকে ড্রাই লিজ চুক্তিতে আনা হচ্ছে। বিমানের সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষয়টির অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে জ্বালানিসাশ্রয়ী ছোট আকারের দুটি উড়োজাহাজ সংগ্রহ করতে সপ্তম দফায় দরপত্র আহ্বান করে বিমান। সর্বশেষ আহ্বান করা দরপত্রে ৪৫ থেকে ৮০ আসনের দুটি টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজ পাঁচ বছর মেয়াদে ড্রাই লিজ অথবা লিজ-পারচেজে নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, স্মার্ট এভিয়েশন থেকে দুটি উড়োজাহাজ সংগ্রহের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি সই হবে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী জানুয়ারি থেকেই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট শুরু করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, ড্যাশ ৮ কিউ-৪০০ প্রপেলার ইঞ্জিনচালিত উড়োজাহাজ মধ্যম পাল্লার দূরত্ব যাতায়াতে সক্ষম। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন এয়ারলাইনসে এটি বেশ জনপ্রিয়। এর প্রধান কারণ ছোট রানওয়েতে এ উড়োজাহাজ সহজে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। এছাড়া জ্বালানিসাশ্রয়ী হিসেবেও সমাদৃত। উড়োজাহাজটির আরেকটি বিশেষত্ব, কেবিনে শব্দ কম শোনা যায়। এসব উড়োজাহাজ ৭৬ আসনবিশিষ্ট হয়। দুটি দরজা থাকার পাশাপাশি কার্গো স্পেসও তুলনামূলক বেশি।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভবনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে বিমানকে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করতে বলেন কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান। সে হিসেবে অক্টোবর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু করার কথা ছিল।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস যাত্রী পরিবহন করছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ২০১৩ সালে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১৯ জন। ২০১২ সালে ছিল ৫ লাখ ৮৯ হাজার ১০৮, ২০১১ সালে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০, ২০১০ সালে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৩৩ ও ২০০৯ সালে ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৭।
প্রসঙ্গত, উড়োজাহাজ সংকট ও ক্রমাগত লোকসানের কারণে ২০০৭ সালের বিভিন্ন সময়ে অভ্যন্তরীণ সাতটি রুটের চারটি বন্ধ করে দেয় বিমান। তার আগ পর্যন্ত ঢাকা-যশোর রুটে সপ্তাহে পাঁচটি, ঢাকা-বরিশাল রুটে দুটি ও ঢাকা-রাজশাহী-সৈয়দপুর রুটে প্রতিদিন একটি করে ফ্লাইট চালু ছিল। পরে ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটের ফ্লাইটও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক রুটের সংযোগ হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।