আগামী দিনের ফ্লাইট

478112১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর। আমেরিকার বাসিন্দা তারা দুই ভাই। অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট। বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়েছিলেন তারা দুজনে। মানুষের সফলভাবে আকাশে উড়ার যাত্রা শুরু। এরপর বছরের পর বছর ধরে উড়োজাহাজের আধুনিকরণ চলেছে। আধুনিক উড়োজাহাজগুলো অনেক গতিশীল ও নিরাপদ। এখন গতি ছাড়াও জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিবান্ধব প্রযুক্তি নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশি কাজ করছেন। দ্রুততর এবং নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ভবিষ্যতের বিমান তৈরির কাজ করে থাকে নাসা। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই নাসা ভবিষ্যতের জন্য দারুণ কিছু উড়োজাহাজ তৈরি করতে যাচ্ছে তারা। এগুলো আকাশে ডানা মেলতে শুরু করবে ২০২৫ সালের দিকে। লকহিড মার্টিন, নরথ্রপ গ্রুমান, বোয়িং ইত্যাদির সঙ্গে মিলিত হয়ে এসব উড়োজাহাজ নির্মাণের কাজ করছে নাসা। এদের তালিকায় রয়েছে একটি সুপারসনিক বিমান। এ ধরনের বিমানের শব্দ কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে নির্মাতারা কাজ করে যাচ্ছেন। থাকছে ভবিষ্যতের ‘হাইব্রিড উইং বডি’। এগুলো হবে জ্বালানি সাশ্রয়ী। এ ছাড়া হালকা বিমান ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি যোগের কথা রয়েছে। কিছু বিমানের ইঞ্জিন হবে পাঁচ গুণ বেশি শক্তিশালী।

উড়োজাহাজের রাজত্ব আকাশে। অদূর ভবিষ্যতে আকাশে বিমানজট লাগবে। আর সেটি মাথায় রেখেই অত্যাধুনিক বিমানের নকশা করা হচ্ছে। অল্প জায়গায় এটি সহজেই অবতরণ করতে পারবে। গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া সামলাতেও এই বিমানের জুড়ি থাকবে না। এটি নাসার নকশা করা বোয়িং। যাত্রী পরিবহনে এটি ব্যবহার হতে পারে।

সোলারচালিত বিমান
আগামী দিনের আকাশে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, সাশ্রয়ী বিমানের রাজত্ব তৈরি করতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। সোলারচালিত বিমানের উন্নয়ন নিয়ে কাজ চলছে বছরের পর বছর ধরে। সেই ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে বড় সাফল্যের দেখা মিলল। প্র্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিল সৌরচালিত বিমান। বিশ্বের প্রথম সৌরচালিত বিমান সোলার ‘ইমপালস’ হাওয়াই থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় যাওয়ার অংশ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেয়। তিন দিনের ফ্লাইট শেষ করে বিমানটি ক্যালিফোর্নিয়ায় অবতরণ করে। জাপান থেকে একটি ফ্লাইট শুরুর পর বিমানের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়। পরে আট মাস ধরে সংস্কার কাজের জন্য উড্ডয়ন বিরতি নেয়। পরে হাওয়াই থেকে উড্ডয়ন করে। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবতরণের জন্য বিমানটি স্যান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেইট ব্রিজের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে ভ্রমণ শুরু করে সোলার ইমপালস। এরপর ওমান, ভারত, মিয়ানমার ও চীন হয়ে জাপান পৌঁছায় বিমানটি। পরে সেখান থেকে ৮ হাজার ৯২৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হাওয়াইয়ে যায় বিমানটি। টানা ৫ দিন ৫ রাত ধরে ওড়ার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ বিরতিহীন ভ্রমণের রেকর্ড করে সোলার ‘ইমপালস’।

উন্নততর বিমানের নকশা নিয়ে বহু বছর ধরে কাজ করছে নাসা। সামনের দিনগুলোতে উড়োজাহাজ হয়ে উঠবে অন্যরকম ব্যস্ততম পরিবহন বাহন। মানুষ ও পণ্য পরিবহনে নিরাপদ ও অত্যাধুনিক বাহন হিসেবে তৈরি হবে বিমান। এটি নাসার নকশায় ইলেকট্রিক বিমান। এটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হওয়া সম্পূর্ণ বিদ্যুত্চালিত বিমান হতে পারে।

বিমানের বর্তমান নকশা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ চলছে। ‘কনসেপ্ট অব ফিউচার অ্যারোপ্লেন’ নিয়ে বহু কাজ হয়েছে। এখনো এটি বিশ্বাস করা হয় ভবিষ্যতের বিমানের চেহারা একেবারেই বদলে যাবে। পাখির মতো নমনীয়তা ও নতুন গড়নের বিমান তৈরিতে সচেষ্ট বিজ্ঞানীরা। ২০৫০ সালের মধ্যেই একেবারেই নতুন নকশার বিমানের দেখা মিলবে।

বিমানের আধুনিকায়ন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যুগের পর যুগ লেগে যায় একটি নতুন নকশার ও নতুন প্রযুক্তির বিমান আকাশের সফলভাবে ওড়াতে। এই দীর্ঘ সময়টি পরীক্ষা- নিরীক্ষায় ব্যয় করেন বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা। গবেষণাকারী বিমানের নকশা হিসেবে এটি নাসার প্রিয় নকশা। অদূর ভবিষ্যতে এই আধুনিক নকশার বিমান আকাশে ভাসবে।

এই বিমানটি ২০৪৫ সালের মধ্যে আকাশে ওড়ানোর ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা। এই বিমান শুধু আদলেই ভিন্ন নয়। এটিতে ই-থ্রাস্ট প্রযুক্তি যোগ করার কথা রয়েছে। এটি হতে যাচ্ছে বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে উন্নত কম্পিউটিং নির্ভর বিমান। মানুষের ও কম্পিউটারের মস্তিষ্কের যোগফলে এটি নিয়ন্ত্রিত হবে।

বিমান কাহিনী

নাসার চমক
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী বিমান ছিল কনকর্ড। ১৯৭৬ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আকাশে উড়েছে এই বিমান। এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৫৪ মাইল। অর্থাৎ শব্দের গতির (ঘণ্টায় ৭৬৮ মাইল) প্রায় দ্বিগুণ। এবার কনকর্ড বিমানের চেয়েও দ্রুত গতির বিমান বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে বিমান চড়ার আগ্রহী যাত্রী আছেন অনেক। সেই চাহিদা মেটাতে নাসা এবার এমন বিমান তৈরি করতে চায় যেটা দ্রুতগতিতে যাওয়ার পাশাপাশি শব্দ করবে কনকর্ডের চেয়ে অনেক কম। বিমানটি দেখতে কেমন হবে, শিল্পীর চোখ দিয়ে তার একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে নাসা। তবে আসল বিমানের নকশা কে করবে তা ঠিক করতে নির্মাতাদের কাছ থেকে নকশা চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে লকহিড মার্টিনকে বেছে নিয়েছে নাসা। কোয়াইট সুপারসনিক টেকনোলজি বা কিউএসএসটি বিমানের নকশা তৈরির জন্য আগামী ১৭ মাসে নাসার কাছ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার পাবে লকহিড। নাসা আশা করছে, প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে ২০২০ সালের মধ্যে এই বিমান পরীক্ষামূলকভাবে আকাশে উড়তে পারে।

এই বিমানের নাম ‘সুপারসনিক গ্রিন মেশিন’। ওড়ার সময় যেন শব্দ (সনিক বুম) কম হয় সেই জন্য প্লেনের পেছনের পাখায় ‘উলটো ভি’ এর মতো যে জিনিসটি দেখা যাচ্ছে সেখানে সুপারসনিক জেট ইঞ্জিন বসিয়েছে লকহিড। নাসার কমিটির সামনে ২০১০ সালে এই নকশা পেশ করেছিল লকহিড। সে সময় তারা জানিয়েছিল, ২০৩০-৩৫ সালের দিকে বিমানটি আকাশে উড়তে পারে।

পাহারাদার ড্রোন
ড্রোন পর্যবেক্ষণকারী বিশ্বের প্রথম শহর দুবাই।
বিমানবন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় ড্রোনের উপস্থিতি জানান দেওয়ার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে দুবাই সিভিল এভিয়েশন অথোরিটি (ডিসিএএ)। নতুন এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠা হলে দুবাই হবে বিশ্বের প্রথম ড্রোন নির্দেশককারী প্রথম শহর। এক্সপোনেন্ট পোর্টাল সফটওয়্যারটি সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে ড্রোনের উচ্চতা, অবস্থান ও গতি নির্দেশ করবে। নির্দিষ্ট অবস্থানে ড্রোন বিমান কী বহন করছে তাও মনিটরে দেখা যাবে নতুন এ প্রযুক্তিতে।

এ প্রযুক্তির ফলে সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে ড্রোনের কার্যক্রম ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে যখনই কোনো ড্রোন সন্দেহজনকভাবে এলাকায় আসবে তখনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা পাওয়া যাবে। ড্রোন পর্যবেক্ষণ ইউনিটগুলোর সঙ্গে প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী কক্ষের যোগাযোগের মাধ্যমে বিমানবন্দর এলাকা পরিষ্কার রাখা যাবে।

বিমানে সেলফি কাণ্ড
সেলফি আক্রান্ত গোটা বিশ্ব। যেখানে যে যাচ্ছে সেখানেই সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছে ব্যবহারকারীরা। তবে সেই ব্যবহার যদি চারপাশ না বুঝে হয় তবে বিপদ থেকে বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। আর বিশ্বের অন্যতম দুঃখজনক দুর্ঘটনার একটি ঘটেছে বিমানের পাইলটের সেলফি তোলার খেসারত হিসেবে। গণমাধ্যমে খুব একটা সাড়া পড়েনি এই খবরটি। তার দুটি কারণ। প্রথমত, তখনো এটি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত শেষ হয়নি। মে মাসের মাঝরাতে রেঞ্জ এয়ারপোর্ট থেকে উড়ে যায় ছোট সেসনা-১৫০কে বিমান। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ২৯ বছর বয়সী এক পাইলট। একজন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই নিখোঁজ হয়ে যায় বিমানটি। দুর্ঘটনার পরই এর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)। প্রায় সাত মাস তদন্তের পর তদন্তকারীর মতে বিমান চালানোর সময় ককপিটেই স্মার্টফোনে নিজের ছবি, মানে সেলফি তুলতে গিয়েছিলেন পাইলট। আর এ কারণেই দুঃখজনকভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে তাকে। একটি ক্যামেরায় সে দৃশ্য রেকর্ড হয়।

বিমান কীভাবে শূন্যে ভাসে
কোনো বস্তুর চারদিকে বাতাসের চাপ সবসময় সমান। কিন্তু তাকে শূন্যে ছেড়ে দিলে তা মাটিতে পড়ে যায়। তাই এমন একটা শক্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে বস্তুর ওজন এবং অভিকর্ষণ/মধ্যাকর্ষণ শক্তি মোকাবিলা করে বাতাসে ভেসে থাকা যায়। চারদিকে বাতাসের চাপ সমান তাই ওজন এবং মধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীত দিকে বাতাসের চাপ কমালেই নিচ থেকে বাতাসে চাপ ওই বস্তুকে ভেসে থাকতে সাহায্য করবে। এই শক্তির নামই লিফট। যে কোনোভাবে হোক বস্তুর উপরের অংশের বাতাসে চাপ কমালেই ভেসে থাকা সম্ভব।

কাচের বিমান
আধুনিক প্রযুক্তি কত বিস্ময় আমাদের চোখের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই একসময় রূপকথা বলে মনে হতো। তেমনই একটি রূপকথা বাস্তবে নামিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর বিজ্ঞানীরা। এবার প্রথম এমন একটি বিমান আকাশে উড়তে চলেছে যার কোনো জানালা নেই। সেখানে রয়েছে বিশাল বিশাল পর্দা। সহজ ভাষায় বললে, এই বিমানের জানালাগুলোর জায়গায় যাত্রীদের চোখে পড়বে টিভি পর্দায় ভেসে ওঠা প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি। আর তাতে যাত্রীদের মনে হবে বিমানের জানালা দিয়ে বাইরের নীল আকাশ, মেঘ দেখা যাচ্ছে। এখানে কিন্তু একটু ফাঁকি রয়েছে। এই মেঘ ও আকাশ বাস্তবের নয়। পুরোটাই জানালার পরিবর্তে বিমানের পর্দায় ফুটে ওঠা আগে থেকে রেকর্ড করা ভিডিও ও ছবি। বিমানটি কোন জায়গার উপর দিয়ে উড়ছে সেই তথ্যও ফুটে উঠবে ওই স্ক্রিনেই। যাত্রীরা চাইলে আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করতে পারবে সে পর্দা। তবে এই ফাঁকি সহজেই চোখে ধরা দেবে না। মনে হবে এটি কাচের বিমান।

আকাশের দানব
আকাশের রাজত্ব কমাতে যুদ্ধ বিমানের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তবে দানব উড়লে কথা ভিন্ন। দানবাকৃতির বিমান উড়িয়ে সেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চাইছে ব্রিটেন। যুক্তরাজ্যে তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ। বলা হচ্ছে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য এ বিমানটি হেলিকপ্টার, এয়ারশিপ ও উড়োজাহাজে তিনের সমন্বয়। এই বিমানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো একবার জ্বালানি ভরার পর এটি টানা তিন সপ্তাহ উড়তে সক্ষম। আকাশের ব্রিটেনের বর্তমান রাজত্ব কায়েম রেখেছে এয়ারবাস কোম্পানির এ-৩৮০ এবং বোয়িং এর ৭৪৭-৮। কিন্তু বাজিমাত করেছে নতুন এই নকশা। নতুন উড়োজাহাজটি আগের দুটির চেয়ে প্রায় ৬০ ফুট বেশি দীর্ঘ। পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে উড়োজাহাজটি পানিতেও অবতরণ করতে পারবে । এটি মূলত একটি শক্তিশালী পরিবহন বিমান। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হাইব্রিড এয়ার ভেহিকেলস লিমিটেড (এইচএভি) ৬০০ কোটি পাউন্ড ব্যয়ে নতুন এ উড়োজাহাজটি তৈরি করছে। মূলত মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটি আরও বড় আকারে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তখন এটি ৩৯০ ফুট পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। আর প্রশস্ততা ও উচ্চতা হবে যথাক্রমে ১৯৬ ফুট ও ১১৫ ফুট। মালামালের পাশাপাশি ৫০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এ যেন আকাশবিলাস
আকাশে বিলাসিতার স্বপ্ন পূরণেও চলছে নানা প্রচেষ্টা। মাটিতে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, সমুদ্রে ইয়াট আর আকাশে রয়েছে ব্যক্তিগত এয়ারবাস। ব্যক্তিগত এয়ারবাস হিসেবে সবচেয়ে বিলাসবহুল হিসেবে দেখা হয় এ-৩৮০ এয়ারবাসগুলোকে। ছবিতে সেই এয়ারবাসের একটি হানিমুন কক্ষ দেখা যাচ্ছে। এই এয়ারবাস অদূর ভবিষ্যতে তিন তলা পর্যন্ত হতে পারে। এর মধ্যে হোম থিয়েটার, ডাইনিং স্পেস, মিটিং স্পেস ছাড়াও অবকাশ যাপনের নানা আধুনিক সুবিধা যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে ভবিষ্যতে।

যে বিমান বাঁচাবে যাত্রীর জীবন
বিমান বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ একটি বাহন। তবে দুর্ঘটনায় বিমানের ভয়াবহতা যে কাউকে আতঙ্কিত করে তোলে। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়াতে প্রতিনিয়ত কাজ করা হচ্ছে। এমন একটি বিমানের কথা ভাবা হচ্ছে যেটি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে নিজে থেকেই যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে কাজে নেমে পড়বে। এটি কি ভাবা যায় যে, একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হলো ঠিকই কিন্তু কোনো যাত্রী মারা গেল না? এই স্বপ্নের মতো ব্যাপারটিই বাস্তব হতে যাচ্ছে। এই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন ইউক্রেনের একজন অ্যাভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ার। ভ্লাদিমির তাতারেঙ্কো। এই ইঞ্জিনিয়ার একটানা তিন বছর নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে বিমানের যাত্রীদের প্রাণ বাঁচানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন।

তিনি এমন একটি বিমানের নকশা তৈরি করেছেন যেখানে যাত্রীবাহী কেবিনকে ইঞ্জিন ও ককপিটসহ বিমানের মূল কাঠামো থেকে আলাদা করা যাবে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে যাত্রীবাহী কেবিনটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মূল কাঠামো থেকে আলাদা হয়ে যাবে। এবার এই কেবিনটি মাটি কিংবা পানিতে নিরাপদে অবতরণ করতে পারবে। কেবিনের ছাদে থাকবে দুটি বিশালকায় প্যারাসুট যার সাহায্যে যাত্রীবাহী কেবিনটি নিরাপদে ভূমিতে অবতরণ করবে। সেইসঙ্গে কেবিনের নিচে প্লাস্টিকের টায়ার বসানো থাকবে যার ফলে পানিতে অবতরণ করলে কেবিনটি পানির ওপর ভেসে থাকতে পারে।

ভবিষ্যতের বিস্ময়

‘ই-জিও এয়ারক্রাফট’ শুধু চ্যালেঞ্জিং নকশা নয়, কম খরচ ও সবচেয়ে হালকা বিমানের নকশা নিয়ে কাজ করে থাকে। ২০১৫ সালে তারা এই নকশাটি প্রকাশ করার পর বহুল প্রশংসিত হয়। প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতায় এটি বাস্তবধর্মী বলে মানা হয়। নিকট ভবিষ্যতে এটি আকাশে ভাসবে।

মার্কোনি ইলেকট্রনিক সিস্টেম ও ব্রিটিশ অ্যারোস্পেস একসঙ্গে যোগ হয়ে ভবিষ্যতের উড়োজাহাজের এই নকশাটি দিয়েছে। এটি সবচেয়ে নিরাপদ অবতরণকারী বিমান হতে পারে। তবে তারা স্বীকার করেছেন, এটির অবয়ব অন্তত আগামী দশ বছরের মধ্যে দেখা যাবে না।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমানকে ডাক হয় ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’ বলে। অদূর ভবিষ্যতে বিজ্ঞানীরা মার্কিন প্রেসিডেন&

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.