এভিয়েশন নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনের সংস্কার নিয়ে এ সপ্তাহেই বড় ধরনের ঘোষণা আসছে। এশিয়া সফর শেষে রবিবার দেশে ফিরেই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে পারেন। প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে প্রথম দফায় বাংলাদেশিসহ ৫০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর বৈধতার ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের সূত্রের বরাত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ওবামা আইন প্রণেতাদের বলেছিলেন, ‘অনেক ধৈর্য ধরেছি। অভিবাসীদের বৈধতার ব্যাপারে আর কোনো অপেক্ষা নয়।’ নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এ বছর শেষ হওয়ার আগেই অভিবাসন সমস্যার সমাধান করতে চান তিনি।
রিপাবলিকানদের ক্রমাগত বিরোধিতার কারণে অভিবাসন নিয়ে কংগ্রেসে এখনই কোনো আইন বা প্রস্তাব গ্রহণের সম্ভাবনা নেই। একই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বিবেচনায় অভিবাসী এবং উদারনৈতিক গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে এ নিয়ে প্রেসিডেন্টের ওপর রাজনৈতিক চাপও প্রচণ্ড।
হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, অভিবাসন-সমস্যা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্বাহী আদেশটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংবাদমাধ্যমের তথ্যে জানানো হয়, নির্বাহী আদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে এমন সব সন্তানের মা-বাবার অবৈধতার অবসান ঘটবে। অনেকে পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর আর ফিরে যায়নি। বিভিন্ন পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর অনেকেই বিয়ে করে বা লিভ টুগেদার করে সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
এসব সন্তান জন্মসূত্রেই এ দেশের নাগরিক। তাদের মা-বাবারা প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে বৈধতার সুযোগ পাবেন। অন্যদের সঙ্গে ব্যাপকসংখ্যক অবৈধ বাংলাদেশি এ দলটিতে রয়েছে। অভিবাসন সংস্কার নিয়ে ওবামার নির্বাহী আদেশের দিকে উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে এমন লাখো অবৈধ অভিবাসী।
মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, নির্বাহী আদেশের এ অংশের কারণেই প্রায় ৩৩ লাখ অবৈধ অভিবাসীর বৈধতা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। নির্বাহী আদেশে মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অপ্রাপ্তবয়স্কদের বৈধতা দেওয়ার বিধান থাকবে। ফলে আরো ১০ লাখেরও বেশি লোক বৈধতা পাবে। অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে যাদের প্রযুক্তিগত যোগ্যতা রয়েছে, নানা ক্ষেত্রে যারা দক্ষ কর্মী হিসেবে বিবেচিত হবে, তাদেরও বৈধতা দেওয়া হবে। আদালত কর্তৃক বিতাড়নের শিকার (ডেপোর্টেশন) অবৈধদের কথাও নির্বাহী আদেশে থাকবে বলে সংবাদ সূত্রে জানানো হয়েছে।
তবে অবৈধ অভিবাসনের সময় যারা গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল, তাদের দ্রুত দেশ থেকে বিতাড়ন করা হবে। সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। সীমান্তরক্ষীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বৈধতার জন্য উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে অভিবাসন আবেদনের ফি কমানো হবে। বর্তমানে প্রতি আবেদনের জন্য ৬৮০ ডলার ফি দেওয়া লাগে। নির্বাহী আদেশে প্রথম ১০ হাজার আবেদনকারীর জন্য ফি অর্ধেক করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।