পাইলিংয়ের ১ বছরের মধ্যেই স্বপ্নের পদ্মাসেতু

2016_05_06_13_25_50_eTkeuQLkyounDbAOMZFi51CRh6rGfd_originalধীরে ধীরে পদ্মায় ভেসে উঠছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। পদ্মার বুকজুড়ে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে পাইলিংয়ের কাজ। এ কাজ সম্পন্নের এক বছরের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে স্বপ্নের পদ্মাসেতু।

শুক্রবার পদ্মাসেতুর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে কাজ চলছে। দেশের মানুষের স্বপ্নের এই সেতুটি দৃশ্যমান হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ও চোখে পড়ে।

মাওয়া জাজিরা অংশে মোট ৫ টি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। মাওয়া অংশে ৬ ও ৭ নম্বর পিলার ও জাজিরা ৩৬, ৩৭ ও ৩৯ নম্বর পিলারের কাজ চলছে।

পদ্মাসেতু প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, মোট পিলার হবে ৪২টি। এর মধ্যে শুরু ও শেষে ১২টি পিলারের ওপর পাইলিংয়ের কাজ হবে। বাকিগুলোর পাইলিং হবে ৬টি করে পিলারের ওপর।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করতে যান। এ সময় তিনি বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে। পাইলিংয়ের কাজ হয়ে গেলে এক বছরের মধ্যে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হবে। এখন যা দেখলাম তাতে করে মনে হচ্ছে, পদ্মার কাজ নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে শেষ হবে।’

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতু নির্মাণে মোট বরাদ্দ ২৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের অগ্রগতি ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে মূল ব্রিজের কাজ ২১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং নদী শাসনের কাজ ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সেতু দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে এবং দক্ষিণাঞ্চলের ১৯ জেলার প্রায় ছয় কোটি লোকের জীবন ও জীবিকায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। কারণ এ সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এসব জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির লাঘব হবে। তাদের ভ্রমণ সময় বাঁচবে দুই থেকে তিন ঘণ্টা।

গাড়ি ও রেল চলাচলের জন্য পদ্মাসেতুতে দুটি স্তর থাকবে। উপরের স্তর দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে, এটি কনক্রিটে তৈরি হবে এবং নিচ দিয়ে রেল চলবে, এটির কাঠামো হবে স্টিলের। সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটি হাইওয়ে ও রেললাইনের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯ জেলার যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

মূল সেতু নির্মাণে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেতুর মোট ৪২টি পিলারের ওপর স্টিলের স্প্যান বসানো হবে। সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান বসানো হবে।

নদীশাসনের জন্য চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেডকে দুটি অ্যাপ্রোচ রোড ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট এবং কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস সেতুর নির্মাণকাজ তদারকি করছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.