নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়া, দুটি মোবাইল অপারেটরের একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাত-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কিছু জটিলতার কারণে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে টুজি ও থ্রিজি তরঙ্গের নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। গত মঙ্গলবার এনবিআরের সঙ্গে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে চলতি অর্থবছরে কর-বহির্ভূত আয়ের তালিকায় তরঙ্গ নিলামের আয়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লাভের আশায় এর আগেও টুজি ও থ্রিজি নিলাম করার জন্য বিটিআরসি উদ্যোগ নিলেও সিম প্রতিস্থাপন কর প্রত্যাহার, তরঙ্গ ব্যবহারে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেওয়াসহ কয়েকটি কারণ দেখিয়ে গত বছরের ৩০ এপ্রিলের নিলামে অংশ নেয়নি মোবাইল ফোন অপারেটররা। দুবার নিলাম তারিখ পেছানোর পরও অপারেটদের অনাগ্রহে নিলাম প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এরপর তরঙ্গ নিলাম নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি।
জিএসএম বা টুজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অপারেটররা ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ও তৃতীয় প্রজন্মের থ্রিজি নেটওয়ার্কের জন্য ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করে। সংশোধিত নীতিমালায় অপারেটরদের দাবি অনুযায়ী প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেওয়ার বিষয়টি যুক্ত করার উদ্যোগও নিয়েছে বিটিআরসি।
শুরুতে টুজি ব্যান্ডের প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের মূল্য ৩ কোটি ডলার আর থ্রিজি ব্যান্ডের তরঙ্গ মূল্য ২ কোটি ২০ লাখ ডলার ধরা হলেও পরে তা দুই ব্যান্ডের জন্যই সমান আড়াই কোটি ডলার নির্ধারণ করা হয়। সর্বনিম্ন দরে বিক্রি হলেও এই তরঙ্গ নিলাম থেকে সরকারের আয় হতে পারে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ (টুজি) ব্যান্ডের দুটি ব্লকে ১০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ ও ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ (থ্রিজি) ব্যান্ডে তিনটি ব্লকে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামের মাধ্যমে বিক্রির জন্য উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি। কিন্তু সেটাও অপারেটরদের নানান দাবির প্রেক্ষিতে ভেস্তে যায়। এরপর চলমান ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ নিলামের ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত এবারও তা আলোর মুখ দেখলো না।
এদিকে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম গত সপ্তাহে বিটিআরসিকে টুজি ও থ্রিজি নিলামের খসড়া গাইডলাইন পাঠানোর জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল। ইতিমধ্যে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত গাইডলাইনের খসড়া পাঠিয়েছে কমিশন। তবে তারানা হালিম এই মুহূর্তে সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে ফিরেই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে।