ভূমিকম্প মোকাবেলায় বিশ্বের বৃহত্তম বিয়ারিং পদ্মাসেতুতে

Paddma1_BG20160507164629কারোরই অজানা নয় যে, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতা সম্পন্ন জার্মান প্রযুক্তির হ্যামার এখন পদ্মাসেতু প্রকল্পে। ২ হাজার ৫শ’ টন ওজনের আঘাত হানতে সক্ষম হ্যামারটি। এবার নতুন খবর হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিয়ারিংও ব্যবহার করা হবে পদ্মাসেতু প্রকল্পে। এক একটি বিয়ারিংয়ের ওজন ১০ টনেরও বেশি।

পদ্মাসেতুর জন্য মোট ৯৬টি বিয়ারিং ব্যবহার করা হবে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে আসবে। পিলারে এসব বিয়ারিং ব্যবহার করা হলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রায় ভূমিকম্প হলেও কোনো সমস্যা হবে না।

মূলসেতু ৪২টি পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকবে। এসব পিলারের অগ্রভাগে গড়ে দু’টি করে বিয়ারিং ব্যবহার করা হবে। কিছু পিলারে কম-বেশি ব্যবহার করা হবে প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সেতু ও সড়ক) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান  বলেন, ‘ভূমিকম্প মোকাবেলার লক্ষ্যে পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশাল বিশাল বিয়ারিং ব্যবহার করবো। প্রতিটি বিয়ারিংয়ের গড় ওজন ১০ টনের বেশি। এতো বড় বিয়ারিং বিশ্বের আর কোনো স্থাপনায় নেই। ভূমিকম্পসহ চারদিকের নানা মুভমেন্ট কাভার করবে এসব বিয়ারিং’।

তিনি জানান, পিলারের কাজ সম্পূর্ণ হলে পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ কম সময়ে বাস্তবায়িত হবে। পিলারের ওপরে স্টিলপ্লেট বসিয়ে দেওয়া হবে। মোট ১ লাখ ২৯ হাজার টন স্টিলপ্লেট ব্যবহার করা হবে। ইতোমধ্যে ৫৯ হাজার টন স্টিলপ্লেট প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে গেছে। চীনের সুপার স্ট্রাকচার বিশাল ইয়ার্ডে থ্রিডি অ্যাসেম্বিংয়ে প্লেট তৈরির কাজ চলমান আছে।

নদীশাসন কাজের জন্য বিভিন্ন সাইজের রক, স্টোনপিচ, সিলেট বালি, সিমেন্ট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী সাইটে মবিলাইজেশন প্রক্রিয়াধীন আছে। ইতোমধ্যে জিও ব্যাগে বালি ভরার মেশিন ও কংক্রিট ব্লক স্থাপনের মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।

মোট ১ কোটি ৩৩ লাখ ১ হাজার ২৪৮টি কংক্রিট ব্লকের মধ্যে ২৭ লাখটি কংক্রিট ব্লক কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। মোট ২ কোটি ১২ লাখ ৭৫ হাজার জিও ব্যাগের মধ্যে ৯ লাখ ৮৭ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান।

এদিকে পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৫০ মিটার এবং মাওয়া প্রান্তে ৫০ মিটার স্থায়ী বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদীশাসনের কাজে মাওয়া প্রান্তে ১ হাজার ১শ’ মিটার ও ৮০০ জিওব্যাগ ডাম্পিং করে রাখা হয়েছে। এছাড়া গত বর্ষায় মাওয়া প্রান্তে তৈরি হওয়া ৭ লাখ ঘনমিটার গর্ত ভরাটের কাজও চলমান আছে।

‌এভাবেই দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মাসেতুর কাজ। সেতুটি মাধ্যমে রাজধানীর সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী এবং ফরিদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি জেলার যোগাযোগ স্থাপন করবে। পদ্মাসেতু এশিয়ান হাইওয়ে করিডোর-১ এর আওতায় পড়ছে। এর নির্মাণ সম্পন্ন হলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.