বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে শিক্ষা খাতে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান।
রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘অ্যাডিশনাল ফাইন্যান্সিং লাউঞ্জিং ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
ফান বলেন, এই অর্থায়ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণে সহায়তা করবে। বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমশক্তিকে আরো প্রতিযোগী করে ভালো মজুরিতে কাজের সুযোগ করে দেবে। এই অর্থায়ন বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের কারিগরি ও দক্ষতা জ্ঞানে সমৃদ্ধ করবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আরো বলেন, বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়নে বেশ উন্নতি সাধন করেছে। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায়। বাংলাদেশ এরইমধ্যে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নত দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই এই কথা সত্য। দক্ষ শিক্ষকেরও বড় অভাব।
তিনি বলেন, দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক। আমরা শিক্ষকদের মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করছি। এসব প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পাশাপাশি প্রশিক্ষণকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
মন্ত্রী বলেন, এ জন্য বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার সহায়তায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, সরকারি ৪৯টি পলিটেনিক্যাল ইনস্টিটিউটে বর্তমানে প্রতিবছরে ৩১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। পরবর্তী বছরে আরো ২৫ হাজার যোগ হবে। বছরে মোট ৫৬ হাজার শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
এতে ‘স্কিল অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট’-এর মূল প্রবন্ধ উপস্থপান করেন প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান।
তিনি জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশই ২৪ বছর বয়সের নিচে। প্রতিবছর ১৩ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশের উপযোগী হচ্ছে। এই যুব সমাজকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির গতি সচল রাখতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। এ জন্য স্টেপ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
স্টেপ প্রকল্পের আওতায় অধিক সংখ্যক সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে এগুলোর শ্রেণিকক্ষ গবেষণাগার উন্নয়ন করবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া বা পাস করা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করা ও চাকরির সুযোগ করে দেবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, এরইমধ্যে এ প্রকল্পের অধীনে এক লাখ ১০ হাজার দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে প্রায় ৭৭ হাজার যুবক ইলেক্ট্রিক্যাল, অটোমোবাইল, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন বিষয়ে ছয় মাসের কারিগরি প্রশিক্ষণ পেয়েছে। প্রশিক্ষণ নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন।