আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দেশে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে সাজা খেটেছে অন্তত ৭০ বিদেশি। কিন্তু তাদের এখনো নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের কারাগার থেকে বের করে নিজ দেশে পাঠানো হবে। অবৈধ বিদেশিদের চিহ্নিত করে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সেফ হোমে রাখা হবে। পরে তাদের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিজ টাকায় নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, গত কয়েক বছর ধরে অবৈধ বিদেশিরা কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তাদের কারোরই ভিসার মেয়াদ নেই। তারা নিরীহ লোকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অবৈধ বিদেশিদের ধরে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা বলেন, আফ্রিকানসহ অন্য বিদেশিরা ভিসার মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে। তখন বের করাই যায় না তারা কোন দেশের নাগরিক। ইমিগ্রেশন থেকে অবৈধ বিদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওই তথ্যগুলো আমরা পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে ইন্টারপোলকেও অবহিত করে রাখব। বাংলাদেশে ফুটবল খেলতে আসা খেলোয়াড়রাও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত আছে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে আলোচনা করে অবৈধ বিদেশিদের ফেরত পাঠাতে হয়। দাগি অপরাধীদের ক্ষেত্রে পুশব্যাক করার রীতিও চালু আছে। তবে করোনার কারণে তা বন্ধ আছে। বাংলাদেশে ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী অবৈধভাবে বসবাসের জন্য গ্রেপ্তারের পর পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধানও আছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অবৈধ বিদেশিদের ব্যাপারে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। যেভাবেই হোক অবৈধদের বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য আমরা প্রত্যাবাসন ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ ফান্ড গঠন হয়ে যাবে। আর বিদেশিরা যাতে এলোমেলোভাবে বসবাস করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও বলেন, গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থানরত ৭০০ বিদেশি নাগরিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপরও তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের ফিরিয়ে নিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এমবাসিগুলো যদি কোনো উৎসাহ না দেখায়, তাহলে আমাদের দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদেশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেব।’
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, অবৈধ বিদেশিরা প্রতারণা, মাদক ও জাল টাকার কারবারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বেশি প্রতারণা করছে। ওইসব অবৈধ বিদেশিকে নিজ দেশে পাঠাতে প্রত্যাবাসন ফান্ড গঠন করার চেষ্টা চলছে। ওই ফান্ডের বেশিরভাগ অংশের জোগান দেওয়ার কথা রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে।
সুত্র- দেশ রূপান্তর