নিবন্ধন ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে নতুন সিম!

2016_05_09_18_16_05_rb61uS2tmzfo47o7VYR7zkdstJdRqp_originalকথা ছিল অনিবন্ধিত মোবাইল সিমগুলো ৩১ মে’র পর থেকে প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ রাখা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। আর এ সুযোগে উল্টো আগের মতোই নিবন্ধন ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সিম। রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ঘুরে এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের মেয়াদ প্রথম দফায় শেষ হয় গত ৩০ এপ্রিল। এ পর্যায়ে মোট ৮ কোটি ৯০ লাখ সিম নিবন্ধিত হয়। বাকি থাকে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ সিম ও রিম। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত সময় বর্ধিত করে সরকার।

সিম নিবন্ধনে গ্রাহক এবং রিটেইলারদের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই। যার ফলে এ পর্যন্ত মাত্র ১০ লাখ সিম নিবন্ধন হয়েছে। যা মোট অনিবন্ধতি সিমের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এমনটাই বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ মঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের এক পর্যবেক্ষণে। সংগঠনটি তাদের পর্যবেক্ষণ টিমের মাধ্যমে মাঠ পর্যায় থেকে এসব তথ্য তুলে এনেছে।

এমনকি গত ৩০ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বেশকিছু প্রস্তাবনা ও নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেই। বলা হয়েছিল, প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে অনিবন্ধিত সিমগুলো ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ রাখা হবে, কিন্তু তা হয়নি। আবার নির্বাচন কমিশনের লোকজন গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলোতে থাকার কথা থাকলেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। এমন কি ১৩০ সদস্য বিশিষ্ট বিটিআরসির পর্যবেক্ষক টিম মাঠ পর্যায়ের কাজ করার কথা থাকলেও তাদেরকেও লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো লক্ষ্য করা গেছে, আগের মতোই নিবন্ধন ছাড়াই আবারো সিম বিক্রি চলছে। গ্রাহকরা জিজ্ঞাসা করলে রিটেইলাররা বলছেন, এগুলো নিবন্ধন করা আছে।

মাসুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি কমলাপুরে একটি দোকানে সিম কিনতে আসেন। তখন দোকানদারকে তিনি বলেন, ‘আমি তো ভুলে কাগজপত্র ফেলে রেখে এসেছি।’ তখন দোকানদার বলেন, ‘সমস্যা নেই আপনি সিম নিয়ে যান। এগুলো নিবন্ধন করা আছে। আমরা আগেই এসব সিম নিবন্ধন করে রেখেছি।’

বাংলাদেশ মঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গত ৮ এপ্রিল বিটিআরসি দপ্তরের সকল অপারেটরদের নিয়ে (ভোক্তাদের প্রতিনিধি ছাড়া) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিটিআরসি সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা না হয়ে উল্টো অপারেটরদের প্রতিনিধি বা ব্যবসায়ী সংগঠনের মতো সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন- ৩১ মে’র পর অনিবন্ধিত সিমগুলো আর নিবন্ধন করা যাবে না। তবে কেউ ১৫০ টাকা রিচার্জ করে তাহলে ওই সিমগুলো সক্রিয় হবে।’

তিনি বলেন, ‘সেবার কথা উল্লেখ না করে, গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা না করে যে অপারেটররা গ্রাহকদের ভোগান্তি ও হয়রানি করলো তাদের কোনো জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়নি। রিটেইলাররা অনৈতিকভাবে অর্থ আদায় করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ব্যবসায়ীদের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে বিটিআরসি সারা জাতিকে হতাশ করেছে।’

মঠোফোন গ্রাহকদের এ নেতা আরো বলেন, ‘১ মে থেকে আমরা রাজধানীর অনেক মার্কেটে ঘুরে দেখেছি। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্য প্রতিমন্ত্রী যেসব সুবিধা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তার সিকিভাগও লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো দেখা গেছে সমন্বয়হীনতার অভাব।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.