ফেল করা যাবে না, শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী

Pm-hasina20160511130618শিক্ষাক্ষেত্রে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন কোনোভাবেই পরীক্ষায় ফেল করা যাবে না, ভালো ফলাফল করতে হবে।

আর একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লেই পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (১১ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে গণভবনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ, শিক্ষাসচিব ও মন্ত্রণালয়ের উধ্র্বতন কর্মকর্তা এবং প্রতিটি বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিজিটাল এই বাংলাদেশে আগের মতো অার পরীক্ষার ফলাফল পেতে শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি করতে হয় না, এখন ঘরে বসেই ফলাফল জানা যায়, এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও গিয়ে অপেক্ষা করে, পয়সা খরচ করে ফলাফল দেখতে হবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এসএমএস’র মাধ্যমেই ফল জানা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের অভিনন্দন। অভিনন্দন অভিভাবকদেরও। শিক্ষার্থীদের একটু ভালো সুযোগ দিলেই তারা ভালো করবে; আমরা তাদের সব রকম সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং কারো খারাপ ফলাফল করার কোনো সুযোগ নেই।

এই সময়ে ছেলেরা নাকি মেয়েরা ভালো করলো, সে নিয়ে কথা না বলাই ভালো এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তাও মেয়েরা যখন ভালো ফল করে তখন একটু খুশিই লাগে।

এবারের এসএসসি ও সমমানে সব মিলিয়ে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ০.৯১ শতাংশ বেশি পাশ করেছে।

ছেলেরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সে জন্য তাদের আরও মনোযোগী হয়ে পড়ালেখা করতে হবে। আমরা চাই আমাদের দেশের ছেলে-মেয়ে সবাই সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে আরও উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ফেল করার কোনো অর্থ হয় না। ফেল করা যাবে না। মনে রাখতে হবে একটু ভালোভাবে পড়লেই পাস করা সম্ভব।

উচ্চ শিক্ষায় বিশেষ ফান্ড করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে বিপুল সংখ্যক মেধাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এতো সংখ্যক মেধাবৃত্তি অন্য কোনো দেশ দেয় কিনা আমি জানি না।

‘আমি চাই আজকের দিনের যারা শিক্ষার্থী তারা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাক। আমরা বিজয়ী জাতি, গর্বিত জাতি- সব সময় মাথা উঁচু করে চলতে চাই। সে জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হলো শিক্ষা। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে, এখন সরকারি অনেক সুযোগ-সুবিধা, সেগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

বিশেষায়িত শিক্ষায় তার সরকারের বিশেষ গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার শুধু শিক্ষাই নয়, কর্মসংস্থানের দিকেও জোর দিচ্ছে। আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবো এটাই আমার বিশ্বাস’।

এছাড়া আগামীতে যারা পরীক্ষা দেবে তাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার প্রতি জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন ঝালকাঠি ও পঞ্চগড়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে। ফল প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা তাদের মনোভাব তুলে ধরে। আর প্রধানমন্ত্রীও তাদের সঙ্গে আনন্দ অনুভূতি ভাগাভাগি করেন।

এর আগে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা বোর্ডের ফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ হোসেন, কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল খালেক, বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক, সিলেট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া, যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূরুল মজিদ, মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম সাইফুল্লাহ ও কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান নিজ নিজ বোর্ডের ফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

এবার মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন। এর মধ্যে এএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৮৮.৮০%, এক্ষেত্রে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৬,৭৬৯ জন। দাখিলে মোট পাশ করেছে ৮৮.২২% যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৮৯৫ জন। আর কারিগরি বোর্ডে৮৩.১১% পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০৯০ জন।

২০১৫ সালের চেয়ে ২০১৬ সালে পাশের হার ১.২৫ শতাংশ বেড়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.