আকাশে ওড়ার সময় বিমানের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে চোখে পড়ে সুন্দর প্রকৃতি। বিমান আকাশে অনেক উঁচুতে থাকলে মেঘের আনাগোনার দেখা মেলে। যেন মেঘের মাঝ দিয়ে ভেসে চলেছে একটি ভেলা। বিমানের যে জানালা দিয়ে যাত্রীরা এ অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করেন, সে জানালাটি কিন্তু আকারে গোলাকার। বর্গাকার, আয়তাকার বা
ত্রিভুজাকৃতির নয়। কিন্তু কেন? বিমানের জানালা সব সময় গোলাকার হয় কেন_ একবারও কি ভেবেছেন?
উড়োজাহাজের জানালা গোল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো নিরাপত্তা। এটি গোল না হলে যে কোনো সময় বিমানের দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। শুধু এ কারণেই ১৯৫৩ সালে মাঝ আকাশে ভেঙে পড়েছিল দুটি বিমান। মৃত্যু হয়েছিল ৫৬ বিমান আরোহীর। তাই অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়াররা সব সময়ই উড়োজাহাজের জানালা গোল রাখার পক্ষপাতী।
বিমানের আকার নিয়ে বহুকাল থেকেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের গবেষণার ফলেই বহু বদল এসেছে বিমানের প্রযুক্তিতে। বিমান যাতে নিরাপদে বেশি যাত্রী বহন করতে ও দ্রুত গন্তব্যে পেঁৗছাতে পারে, তা মাথায় রেখেই বিমান নির্মাণে অনেক পরিবর্তন এনেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। যাত্রী সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বিমানের জানালার আকারও বারবার বদলাতে হয়েছে।
১৯৫০ সালে বিমানে চৌকো জানালা চালু হয়। কিন্তু ১৯৫৩ সালে পরপর দুটি বিমান আকশে ভেঙে পড়ায় এই চৌকো জানলার দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন ইঞ্জিনিয়াররা।
অ্যারোস্পেস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চৌকো জানালার চারটি কোণ থাকায় বাতাসের চাপ অনেক বেশি হয়। যতা কোণের সৃষ্টি, তত বেশি দুর্বল জায়গা থেকে যায়। এতে জানালার ওপরে সমানভাবে বাতাস চাপ দেয় না। বাতাসের চাপ বেড়ে গেলে বা যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কোণের ওপর চাপ বেশি পড়ে। ফলে জানালা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এতে ঘটে বিমান দুর্ঘটনা। আর জানালা গোল হলে কোনো কোণ না থাকায় বাতাসের চাপ সমানভাবে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। ইনডিপেনডেন্ট, হাফিংটন পোস্ট ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।