দৌড়াচ্ছেন মন্ত্রী, পালাচ্ছে দালাল (ভিডিও)

Sabbir-bg120160511173349দালালদের খুঁজতে মন্ত্রণালয় ছেড়ে সরকারি অফিসে ছুটছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার ভয়ে পালাচ্ছেন দালালরা। হাতে-নাতে মন্ত্রী পাকড়াও করছেন অনেককে।

উত্তরা বিআরটিএ অফিস থেকে ধরেছেন এক দালাল হোতাকে। এরপর কেরানীগঞ্জে বিআরটিএ অফিসে হানা দেওয়ার আগেই পালিয়েছে দালাল চক্র। দালাল ধরতে মন্ত্রীর এই দৌঁড় চলছে বিআরটিএর এক অফিস থেকে আরেক অফিসে।

https://youtu.be/INH07sdgll4

শুধু দালালই নয়, তাদের সহযোগী বিআরটিএ কর্মকর্তা খুঁজতে এরকম আচমকা চুপিসারে অভিযানে বের হচ্ছেন মন্ত্রী। ফেসবুক ও টেলিফোনে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভিযোগে এসব তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (১১ মে) সকাল ১০টার দিকে মন্ত্রী যখন হঠাৎ হাজির বিআরটিএ-র উত্তরা অফিসে। তখন দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায় দালালদের। কিন্তু দৌঁড় দেওয়ার আগেই লিটন নামের একজন ধরা পড়েন। ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসা সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে তিনি টাকা আদায় করতেন। নিজের পরিচয় দিতেন বিআরটিএ’র ‘ডিডি’ হিসেবে।

দীর্ঘদিন থেকে তাকে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন ম্যজিস্ট্রেটরা। অবশেষে মন্ত্রীর সামনে তাকে ধরে দেয় জনতা। তার পকেট থেকে এক হাজার ও পাঁচশো টাকার দুই বান্ডিল নোট জব্ধ করা হয়।

 

পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিআরটিএ‘র আরও দালাল চক্রের সন্ধান পান ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের সময় মন্ত্রী বিআরটিএ’র প্রতিটি তলার কক্ষে কক্ষে ঢুকে তল্লাশি চালান। এমনকি অফিসের বাথরুমেও মন্ত্রী খুঁজে দেখেন কেউ লুকিয়ে আছে কি না।

মন্ত্রী এ সময় বিআরটিএ‘র বিভিন্ন কর্মকর্তার টেবিলের সামনে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে আসছিলেন মন্ত্রী। নাম ধরে এসব অভিযুক্ত বিআরটিএ কর্মকর্তাদের খুঁজতে প্রতিটি তলায় যান মন্ত্রী। তাদের অনেককে চূড়ান্তভাবে হুঁশিয়ার করে দেন তিনি।

মন্ত্রীর এমন অভিযানে লাইসেন্স করতে আসা ভুক্তভোগীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপরে মন্ত্রী চলে যান কেরানীগঞ্জে বিআরটিএ’র আরেকটি অফিসে। সেখানে অফিসের গেট বন্ধ রেখে তল্লাশি চালান মন্ত্রী। আগতদের কাছ থেকে দালালদের সম্পর্কে তথ্য চান তিনি।

তবে ওবায়দুল কাদের বুঝতে পারেন টের পেয়ে পালিয়েছে দালাল চক্র। জনমানুষের ভোগান্তি ঠেকাতে এরকম আচমকা অভিযান অব্যাহত রাখতে চান তিনি।

শুধু বিআরটিএ নয় বিআরটিসি সহ তার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সরকারি অফিস, যানবাহনে অভিযান করছেন নিয়মিত। প্রকৃত চিত্র খুঁজে বের করে কাউকে না জানিয়েই অভিযানে যাচ্ছেন সেতুমন্ত্রী।

https://youtu.be/Zsp7VoANLXU

উত্তরা বিআরটিএর অফিস থেকে মন্ত্রী যখন ক্ষিলক্ষেত হয়ে মতিঝিলের দিকে যাচ্ছেন। তখন একটি বিআরটিসি বাস দেখে থেমে গেলেন। নিজের গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে তিনি উঠে গেলেন যাত্রীবাহী বিআরটিসির ওই বাসে। বাসের আসন, পাখা, সিট ঠিক আছে কি না তা দেখলেন। যাত্রীদের কাছে কোন অভিযোগ আছে কি না তাও জানতে চাইলেন।

হঠাৎ যাত্রী বেশে গাড়িতে মন্ত্রীর এমন আগমন দেখে হচকিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। কেউ কেউ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন। আবার সিটে বসে থাকা অনেক যাত্রীর বিশ্বাসই হচ্ছিলো না মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গাড়িতে উঠে দাঁড়িয়ে আছেন।

মন্ত্রী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বললেন অনেক যাত্রীর সঙ্গে। এ সময় বিস্মিত যাত্রীদের অনেকেই মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধরে রাখছিলেন মন্ত্রীর আগন্তুক আগমন। আরেকজন তরুণী যাত্রী মন্ত্রীর এমন দৃশ্যকে সেলফিবন্দি করেও রাখছেন এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

রাস্তায় মন্ত্রীর এমন ছুটোছুটি ইদানিং প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ অসন্তোষ নিজ চোখে দেখতে এবং তড়িৎ সমাধানে মন্ত্রী চুপিসারে বের হয়ে পড়ছেন মন্ত্রী।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.