ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় কার্গো পরিবহনে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি আলাদা বর্ধিত নিরাপত্তা জোন গঠন করা হয়েছে। এ নিরাপত্তা জোনের মাধ্যমে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে তিনটি এয়ারলাইনস। এয়ারলাইনস তিনিটি হলো— বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও লুফতানসা।
এদিকে ঢাকা থেকে আকাশপথে কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে অস্ট্রেলিয়া। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, গত ৫ মে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশন নিষেধাজ্ঞা শিথিল-সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে অন্য দেশে রি-স্ক্যানিং করে বাংলাদেশের মালপত্র অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারবে। সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির কারণে অস্ট্রেলিয়া সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষের এক পর্যায়ে গত বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট নিষিদ্ধ করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিরাপত্তায় ‘রেডলাইন এভিয়েশন সিকিউরিটি’ কাজ শুরু করার পর নতুন মর্যাদা পেয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যার ধারাবাহিকতায় গত ৫ মে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কার্গো ভিলেজ আরএ-৩ (ইইউ এভিয়েশন সিকিউরিটি ভ্যালিডেটেড রেগুলেটেড এজেন্ট) হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। ইউরোপীয় দেশগুলোয় কার্গো ফ্লাইট পাঠাতে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বাধ্যবাধকতা অনুসারে এ মর্যাদা আবশ্যক।
এ প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন জানান, ইউরোপীয় দেশগুলোয় আকাশপথে কার্গো পাঠানোর জন্য রেডলাইন প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহজালাল বিমানবন্দরে একটি আলাদা বর্ধিত নিরাপত্তা জোন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও লুফতানসাকে নিরাপত্তা জোনের মাধ্যমে ইউরোপে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তা জোনের সম্প্রসারণ করে ক্রমান্বয়ে এয়ারলাইনসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্গো ভিলেজ আরএ-৩ হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে এবং সব এয়ারলাইনস এর আওতাভুক্ত হবে।
যুক্তরাজ্যে কার্গো পরিবহন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কার্গো পরিবহনে যুক্তরাজ্যের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি, খুব দ্রুত যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করছে। এছাড়া চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৪ মার্চ রেডলাইন কাজ শুরুর পর এ পর্যন্ত ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বেবিচকের নিরাপত্তাকর্মী ও স্ক্রিনারদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পর গত ২৪ এপ্রিল থেকে বেবিচক নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে লন্ডন ফ্লাইটের সম্পূর্ণ দায়িত্ব হস্তান্তর করে রেডলাইন। সেদিন থেকে অদ্যাবধি সিএএবি নিরাপত্তাকর্মীরা বিমানের লন্ডন ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছেন।
আরও খবর