প্রশাসনের খবর নেই, করছে বিজিবি

2016_05_12_10_52_16_fP8BHSw3nO4x6JZmhNnRagihV85dZj_originalদীর্ঘদিন ধরে পানছড়ি উপজেলা সদরের কলাবাগান-হাসাননগর সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়লেও সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের ভ্রুক্ষেপ না থাকায় সংস্কার হয়নি। তাই দায়িত্ব থেকে নয়, জনকল্যাণে তিন গ্রামের ১০ হাজার মানুষের জন্য ওই সড়কের প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২০ ব্যটালিয়নের জোয়ানরা।

কিন্তু অবাক করা কথা হচ্ছে যাদের করার কথা সেসব মাথাভারী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতি বছরের উন্নয়নের নামে হাজার হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য লোপাট করছে। তাই স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সড়কটিতে মাটি, বালি ও ধারকবাঁধ তৈরি করে সহস্রাধিক লোকের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছে ২০ বিজিবি ব্যটালিয়ন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছে বিজিবির জোয়ানরা। বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনার পাশের সড়কে গত দশদিন ধরে বিজিবি ৬০ জোয়ান এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সড়কের খানাখন্দে বালি ও মাটিভর্তি বস্তা দিয়ে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সড়কটির বেশিরভাগ অংশে খরস্রোতা পাহাড়ি ছড়ার গতিপথ থাকায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কের সাড়ে ৩ কিলোমিটার অংশ জুড়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের কোনো অস্তিত্বও নেই। গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে কয়েক ধাপে কাঠের খুঁটি বসিয়ে তার উপর দেয়া হচ্ছে মাটি ও বালির বস্তা।

স্থানীয় লোকজন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলাকে ধিক্কার দিয়ে জানান, প্রতিবার নির্বাচনের আগে আমাদের কাছে তারা ভোট চাওয়ার জন্য নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু জয়ী হয়ে গেলে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

হাছাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিমল চাকমা ও এলাকাবাসী কবির হোসেন জানান, প্রায় তিন বছর ধরে সড়কটির এমন বেহাল হলেও কোনো কেউ আমাদের কল্যাণে এগিয়ে আসেনি। অথচ যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে লাখ লাখ টাকার বরাদ্দ দিয়ে লুটপাট করছে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।

হাসাননগর, কলাবাগানসহ আরো কয়েক গ্রামের মানুষ এ সড়কের উপর নির্ভরশীল। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে এসব গ্রামে কোনো গাড়ি আসতে চায় না। এতে করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকসময় গুরুতর রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলেও কোনো গাড়ি পাওয়া যায় না। এমন দুর্দশা থেকে আমরা মুক্তি চাই।

বিজিবি ২০ ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহসান আজিজ, পিএসসি জানান, সড়ক নির্মাণ কিংবা মেরামত করা আমাদের কাজ নয়। তবুও মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা এ কাজ গত দশদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছি। ব্যাটলিয়নের ৬০ জন জোয়ান প্রতিনিয়ত এলাকাবাসীদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া পরিবহনসহ অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে এ ব্যাটলিয়ন কিন্তু যাদের করার কথা তাদের কোনো খোঁজ নেই।

সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হতে আরো ১৪/১৫ দিন সময় লাগতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার জোয়ানরা এ কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে। তবুও ৩৫ লাখ টাকার মতো ব্যয় হচ্ছে এ সংস্কার কাজে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.