মানবপাচারের শিকার ২৮ জন দেশে ফিরছে ১৯ মে

sm-120160517171626অবৈধ পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে থাইল্যান্ডে আটক হয়েছিল দেড় হাজার বাংলাদেশি। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪৭২ জনকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস।

সর্বশেষ ২৮ জনকে ১৯ মে ফেরত পাঠানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে দূতাবাস।

থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি কাজী মুনতাসির মুরশেদ বলেন, থাইল্যান্ডের নৌ-বাহিনী দেড় হাজার জনকে আটকের পর তাদের ঠাঁই হয়েছিল ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪৭২জনকে আগে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি ২৮ জনকে ১৯ মে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

২৮ জনের বিমান ভাড়া থেকে দেশে ফিরে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত সব খরচ আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা বহন করবে বলে জানান কাজী মুনতাসির মুরশেদ।

দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ২৮ জনের মধ্যে অধিকাংশের বাড়ি কক্সবাজার জেলায়।

এদের মধ্যে আছে রুস্তম আলী, গিয়াস উদ্দিন, আইয়ূব আলী, শরীফুল আলম, আজিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আব্দুল মালেক, মাসেক উল্লাহ, আবুল কালাম, রাফাতুল ইসলাম, মো. ইয়াসিন, রবিউল ইসলাম, আব্দুল খালেক, জাহাঙ্গীর আলম, রহমত উল্লাহ, মো. আলমগীর, আব্দুস শাকুর, রহমত উল্লাহ, মো. নাসির, মিজানুর রহমান, মনসুর আলম, নূরুল আবসার, রবিউল হাসান, মো. শাহজাহান, নূর হাসেম, আব্দুল হক, মো. লিটন এবং আব্দুস শাকুর।

সূত্রমতে, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তাদের থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী আটক করে ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়েছিল। চার দফায় ১ হাজার ৪৭২ জনকে ফেরত পাঠানোর পর গত ৭ এপ্রিল থেকে বাকি ২৮ জনকে মুক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস। চলতি মাসের শুরুতে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার মাধ্যমে তাদের ফেরত পাঠাচ্ছে দূতাবাস।

দূতাবাস সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় রওনা দেওয়ার ঘটনা কমেছে বলে তাদের কাছে তথ্য আছে। যে দেড় হাজার বাংলাদেশি আটক হয়েছিল তাদের অধিকাংশই প্রথমে সড়কপথে মায়ানমার গিয়েছিল। সেখান থেকে দালালের মাধ্যমে তারা নৌকায় উঠে। তাদের মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের সমুদ্রপথে সীমান্ত রেনংয়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের নামিয়ে দিয়ে বলা হয় এটাই মালয়েশিয়া।

থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি কাজী মুনতাসির মুরশেদ বলেন, কাজের সন্ধানে আসা অসহায় লোকগুলোর কাছে কোন পাসপোর্ট থাকে না। টাকাপয়সাও থাকে না। বাসের টিকেটও কিনতে পারেন না। যখন তারা ধরা পড়ে যায় তাদের ঠাঁই হয় ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে।

তবে শুধু মানবপাচারকারীর খপ্পরে পড়ে বাংলাদেশিদের হয়রানির শিকার হতে হয়, তা-ই নয়। বৈধভাবে আসা বাংলাদেশিরা থাইল্যান্ডের দালালদের খপ্পড়ে পড়েও হয়রানির শিকার হন।

কাজী মুনতাসির মুরশেদ বলেন, অনেকে কাজের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থাইল্যান্ডের দালালদের দ্বারস্থ হন। দালালরা তাদের ভিসা সংগ্রহ করে দেন, কিন্তু সেটা ভূয়া। এভাবে ভূয়া ভিসা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে কাজ করার পর যখন তারা দেশে ফিরতে চায় তখন ধরা পড়ে তাদের ভিসা ছিল ভূয়া। তখন তারা আইনের ফাঁদে পড়ে যান। অনেককে জেলে যেতে হয়।

দালালদের হয়রানির বিষয়টি ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড সরকারকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভিসাসহ যে কোন পরামর্শের জন্য থাইল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের দূতাবাসে যোগাযোগ করা উচিত। বাংলাদেশিদের জন্য দূতাবাসের দরজা সবসময় খোলা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.