এভিয়েশন নিউজ: ২০১৪ সালে বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো শ্রমবাজার উন্মুক্ত না হলেও জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে। মূলত, গত বছর কাতারে জনশক্তি রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় ২০১৩ সালের তুলনায় জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। তবে ২০১২ সাল ও তার আগের কয়েক বছরের তুলনায় জনশক্তি রপ্তানির এ হার বেশ কম।
খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এজন্য দায়ী মধ্যপ্রাচের কয়েকটি দেশে বন্ধ হওয়া শ্রমবাজার উন্মুক্ত না হওয়া এবং ইরাক- লেবাননের রাজনৈতিক সহিংসতা। তবে কয়েকটি দেশের সঙ্গে সফল আলোচনা হওয়ায় খুব শিগগির এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলেও মনে করছেন তারা। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪ জন।
২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৯ হাজার ২৫৩ জন। এই হিসাবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে সারা বিশ্বে জনশক্তি রপ্তানি ১৬ হাজার ৪১৩ জন বেড়েছে। তবে ২০১৪ সালে শুধু কাতারেই জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে ৩০ হাজার ১১২ জন। ২০১৩ সালে দেশটিতে গিয়েছিল ৫৭ হাজার ৪৭৫ জন। আর ২০১৪ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৫৮৭ জন।
গত বছরে জনশক্তি রপ্তানির দেশভিত্তিক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত বছর কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও নেতিবাচক ছিল অধিকাংশ দেশে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, লেবানন, ইরাকসহ কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে; আর কমেছে সৌদি আরব, বাহরাইন, সিঙ্গাপুর, ওমানসহ ইউরোপের অনেক দেশে।
বিএমইটির তথ্য মতে, জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে আরব আমিরাতে ১৪ হাজার ২৪১ জন থেকে বেড়ে গত বছর ২৪ হাজার ২৩২ জন রপ্তানি হয়েছে। কাতারে ৫৭ হাজার ৪৭৫ থেকে বেড়ে ৮৭ হাজার ৫৮৭ জন, লেবাননে ২৫ হাজার ৯০ জন থেকে বেড়ে ২৬ হাজার ৭৭৮ জন, মালয়েশিয়ায় ৩ হাজার ৮৫৩ জন থেকে বেড়ে ৫ হাজার ১৩৪ জন হয়েছে।
জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবে ১২ হাজার থেকে কমে ১০ হাজার ৬৫৭ জন হয়েছে। ওমানে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৮ জন থেকে কমে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪৮ জন, বাহরাইনে ২৫ হাজার ১৫৫ জন থেকে কমে ২৩ হাজার ৩৭৮ জন, জর্ডানে ২১ হাজার ২৮৩ জন থেকে কমে ২০ হাজার ৩৩৮ জন এবং সিঙ্গাপুরে ৬০ হাজার ৫৭ জন থেকে কমে ৫৪ হাজার ৭৫০ জন রপ্তানি হয়েছে। সার্বিকভাবে ২০১৩ সালের তুলনায় গত বছর জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও বেশ কম হয়েছে বিগত কয়েক বছরের তুলনায়।
২০১২ সালে জনশক্তি রপ্তানি হয় ৬ লাখ ৭ হাজার ৭৯৬ জন, ২০১১ সালে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৬২ জন, ২০০৯ সালে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৭২ জন, ২০০৮ সালে ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫ জন এবং ২০০৭ সালে ৮ লাখ ৩২ হাজার ৬০৯ জন। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় জনশক্তি কম হওয়ার বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার বলেন, বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির মূল জায়গা মধ্যপ্রাচ্য।
সেখানকার কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ থাকায় এ হার বাড়ছে না। এ বছর জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।