‘থাইল্যান্ডে সাজবে বাংলাদেশ’, ব্যাংকক পোস্টকে রাষ্ট্রদূত মুনা

Muna-bg20160525123357আগামী ৩০ মে থেকে ১ জুন থাইল্যান্ডের কুইন সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬’। এই আয়োজনে থাইল্যান্ডের সামনে মেলে ধরা হবে বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক। সাজিয়ে তোলা হবে বাংলাদেশকে।

আর বিশাল এই আয়োজনের অন্যতম কারিগর থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম। এই আয়োজনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে থাইল্যান্ডের বিখ্যাত ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকা। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের সামনে।

অনুষ্ঠেয় ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬’ এর বিভিন্ন দিক নিয়ে রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ব্যাংকক পোস্টকে বলেন, শুধু ব্যবসায়িক দিকটিই নয়, এই ট্রেড এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে চলে আসা বিভিন্ন ভুল ধারণার অবসানেরও সুযোগ তৈরি করবে।

তিনি বলেন, মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে একে অপরের সাথে মিলে মিশে বসবাস করছে।

মুনা জানান, তার কাজের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো থাইল্যান্ডের সামনে বাংলাদেশকে আরও বেশি করে পরিচিত করে তোলা।

শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে সাংস্কৃতিক গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করাও এই প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্দেশ্য বলে ব্যাংকক পোস্টকে জানান মুনা। বাংলাদেশের ৫৫টি শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিচ্ছে।

তবে ব্যাংকক পোস্টকে আক্ষেপ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সাথে থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৪ বছর চললেও এর আগে কখনই থাইল্যান্ডে এমন প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয়নি বাংলাদেশ। অথচ গত কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশে এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে থাইল্যান্ড।

মুনা জানান, আসন্ন প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও কানাডায় রপ্তানি করা শুল্কমুক্ত পণ্যগুলোও প্রদর্শন করা হবে।

বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী মহলের বেশির ভাগই বাংলাদেশের উৎপাদন ও রপ্তানি সক্ষমতা এবং তাদের বিশ্ব স্বীকৃত রপ্তানি বাজার সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। তবে এই প্রদর্শনী থাই ব্যবসায়ী ও জনগণের সামনে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পর্কে জানার একটি সুবর্ণ সুযোগ।

এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন বিদ্যুৎ, পর্যটন এবং কৃষি ও পোশাক খাতে বিনিয়োগের জন্যও এই প্রদর্শনী থাই বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ বলে যোগ করেন রাষ্ট্রদূত।

প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিকও তুলে ধরা হবে। ৩০ মে’তে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সেখানে বাংলাদেশি ও থাই ডিজাইনারদের ডিজাইনে রেশম ও বাংলাদেশি মসলিনের ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হবে।

এই ফ্যাশন শোতে যেসব পোশাক উপস্থাপন হবে তার শতভাগ থাইল্যান্ডের বিখ্যাত চিত্রালাদা প্রাসাদের সিল্ক প্রজেক্ট শপ এবং বাংলাদেশের খাঁটি রেশম থেকে তৈরি করা বলে জানান সাইদা তাসনিম মুনা।

রাষ্ট্রদূত মুনা আরও বলেন, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমানে দূরত্ব মাত্র দুই ঘণ্টা। অথচ থাইল্যান্ডের বেশিরভাগ লোকই জানে না যে বাংলাদেশ মায়ানমারের পরই অবস্থিত।

সব মিলিয়ে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক মেলবন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.