প্রবাসীদের আয়ে দেশের অর্থনীতি মজবুত হচ্ছে

Hasina-at-Imperial-bg20160529144631প্রবাসীদের আয়েই দেশের অর্থনীতি মজবুত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাপানের রাজধানী টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া ‘নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা জানান। জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের শেষ দিন রোববার (২৯ মে) স্থানীয় সময় বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রেখেছেন। তাদের আয়েই বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমশ মজবুত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় স্মরণ করেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এ দেশকে এমনভাবে চালানো হয়েছিল যে, তখন বাংলাদেশ মানেই দুর্যোগের দেশ, ভিক্ষুকের দেশ, গরিবের দেশ, হাত পেতে দেওয়ার দেশ বলে চিহ্নিত হতো।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা মাথা উঁচু করে চলবো, আমাদের মাথা কেন নিচু থাকবে?

প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এখন সেই চিত্র পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবেই।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চললেও আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত আছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে উন্নীত করেছি। রিজার্ভ বেড়েছে। রফতানি বেড়েছে। রফতানির জন্য নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করছি। অার্থ-সামাজিক ব্যবস্থার দারুণ উন্নতি হয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন ১৪ হ‍াজার ৭০০ মেগাওয়াট। গত অর্থবছরে আমরা অনেক বড় বাজেট করেছি। সামনে আরও বড় বাজেট আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আর নিম্নে থাকতে পারি না। ঊর্ধ্বে উঠবো। আমরা এটা পারবো, কারণ আমরা সততার সঙ্গে কাজ করছি। সেজন্য দেশকে এগিয়ে নিতে পারছি। আমাদের অর্থনীতি আগে কখনো এতো শক্তিশালী হয়নি।

এসময় দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা নির্বাচন বন্ধের নামে কী করেছে তা সবাই দেখেছে। মা দেখছে তার ছেলে আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। ছোট্ট শিশুকেও তারা পুড়িয়ে মেরেছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার উৎসব হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচশ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে তারা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা ছিল তাদের কাজ।

তাদের সেসব ধ্বংসযজ্ঞে জনগণ মাথা নত করেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও জামায়‍াত-শিবির নিয়ে তারা এ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এখনও তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেসব করছে। বেছে বেছে গুপ্তহত্যা করছে। নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে। মসজিদের মোয়াজ্জিন-মুসল্লিদের মারছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির খালাতো ভাই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাকে তার বন্ধুসহ মেরেছে, যেন এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলে।

যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে যারা আপনজন হারিয়েছে, তাদের চাওয়া ছিলো যুদ্ধাপর‍াধীদের বিচার করা। আমরা সেই বিচার শুরু করেছি। অনেক বাধা সত্ত্বেও আমরা বিচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানো হয়েছিল। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর যেন খুনিদের বিচার না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল। সব হত্যা-খুনের বিচার হচ্ছে এবং হবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.