প্রায় দুই মাস পর গ্রামে ফিরেছে, বাড়ি এসেছে মুস্তাফিজ; সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রাম তেঁতুলিয়ায় তাই বৃষ্টির মধ্যেও আনন্দের কমতি নেই।
সদ্য কৈশোর পেরিয়ে আসা মুস্তাফিজুর রহমান এবার আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরমেন্সে সবার নজর কেড়েছেন। তার ঘরে ফেরায় তাই বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে পরিবার ও বন্ধুদের।
তাকে ঘিরে আগ্রহ দেখা গেছে আশপাশের গ্রামগুলোতেও। বৈচিত্র্যময় বোলিং নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনায় থাকা তারকা মুস্তাফিজকে একনজর দেখতে তার বাড়িতে পড়ছে শয়ে শয়ে মানুষের পায়ের ছাপ।
আইপিএল শেষে সোমবার দেশে ফেরা মুস্তাফিজ বাবা-মার কাছে পৌঁছেছেন মঙ্গলবার প্রায় মধ্যরাতে। সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে বাড়ি ঢুকেই বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরেন ২০ বছরের এই তরুণ।
চার ছেলে-দুই মেয়ের সবার ছোট সন্তানকে এতদিন পর কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মা মাহমুদা খাতুনও।
“ছোট ছেলের জন্য ভালবাসা একটু বেশি। বার বার ওর কথা মনে পড়ে।”
আইপিএলে মুস্তাফিজ যে দলে খেলেছেন, সেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদই হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। ছেলের সাফল্যে খুশিতে থাকা মা রান্না করে মুস্তাফিজের পছন্দের সব খাবার।
“কাজ না থাকলে মুস্তাফিজ সকালে উঠতে দেরি করে। ওর উঠার আগেই সব নাস্তা তৈরি হয়ে যাবে।”
ভাই মোখলেছুর রহমান পল্টুর কথায়ও পরিবারে মুস্তাফিজের জন্য বাড়তি আদরের কথা শোনা যায়।
“ভাই-বোনদের মধ্যে ছোট হওয়ায় মুস্তাফিজের জন্য সবার যত্ন একটু বেশি। তার জন্য একটু আয়োজন থাকতেই হবে,” বলেন তিনি।
অনেক দিন পর মুস্তাফিজকে পেয়ে আনন্দিত বন্ধুরাও। তার বন্ধু হাফিজ, জ্যোতিন্দ্রনাথ মণ্ডল, মণি, আল-আমিন, সাবু, শামীম, হাসান, আসাদুলকে দেখা যায় ব্যস্ত সময় কাটাতে।
হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আইপিএল খেলে বাড়ি ফিরছে। তাই গাছের পাকা, জাম, কাঠাল, নিজের বাড়ির মুরগি ওর জন্য রেখে দিয়েছি।”
ভারতে থাকা অবস্থায় প্রতিদিনই মুস্তাফিজের সঙ্গে কথা হত বলে জানান হাফিজ।
তিনি বলেন, দেশের বাইরে থাকায় বন্ধুর সাথে দেখা হয় না বলে তার জন্য মোবাইল কিনে পাঠিয়েছিলেন মুস্তাফিজ।
মুস্তাফিজকে নিয়ে স্বজন-বন্ধুদের আনন্দ শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার দুপুর থেকেই। ঢাকা থেকে নভো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যা ৭টা ১৮ মিনিটে যশোর বিমানবন্দরে পৌঁছান মুস্তাফিজ।
তাকে স্বাগত জানাতে সেখানে অপেক্ষা করছিলেন মুস্তাফিজের বাবা অবুল কাশেম, খালু আনিসুর রহমান, বড় ভাই মোকলেছুর রহমান পল্টু ও তার বন্ধুরা।
বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর মুস্তাফিজকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান খালু আনিসুর রহমান। সেখান থেকে রওনা দেন সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে। রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকায় খালু আনিসুরের বাড়িতে যান মুস্তাফিজ। এসময় তাকে দেখার জন্য সেখানে জড়ো হন হাজারো ভক্ত।