পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে যে সব প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিদেশী অনলাইন কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতে চান তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর অংশ হিসেবে দুই স্তরে পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ই-টিআইএনের অপব্যবহার ও ভুয়া ই-টিআইএন রোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এনবিআর জানিয়েছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, কোনো সার্ভিস গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই ব্যক্তি করদাতার ই-টিআইএন ইস্যু করার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়নি। বিকল্প পদ্ধতিতে তাদের ই-টিআইএন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পাসপোর্টকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু হাতে লেখা পাসপোর্টের তথ্য অনলাইনে যাচাই-বাছাইয়ে জটিলতা থাকায় ওই সব আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, পাসপোর্টধারী কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী অথবা বিদেশী অনলাইনে ই-টিআইএনের জন্য আবেদন করলে তার অনুকূলে ই-টিকেট ইস্যু করা হয়। ই-টিকেটে আবেদনকারীকে তার অধিক্ষেত্রভুক্ত নির্দিষ্ট সার্কেল, সাক্ষাতের সময় ও তারিখ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে মূল পাসপোর্টসহ সংশ্লিষ্ট কর সার্কেলে হাজির হলে তথ্য যাচাই করে আবেদনকারীকে ই-টিআইএন দেওয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, অনেক কর সার্কেলই তথ্য যাচাই না করে ই-টিআইএন ইস্যু দিয়ে থাকে। এমনকি অনেক সময় আবেদনকারীর তথ্য অনলাইন সিস্টেমে আপলোড করা হয় না। ফলে করদাতার তথ্য অসম্পূর্ণ থাকে। তাই পাসপোর্টধারী আবেদনকারীদের তথ্য দুই স্তরে যাচাইয়ের পর তাদের ই-টিআইএন দেওয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে কোনো প্রবাসী যদি হাতে লেখা অর্থাৎ পুরনো পাসপোর্ট দিয়ে ই-টিআইএন নিতে চান তাহলে প্রথমে তাকে সংশ্লিষ্ট কর সার্কেলে আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সার্কেল পাসপোর্টের প্রযোজ্য তথ্যাদি যাচাই-বাছাই করে অনলাইন সিস্টেমে আপলোড করবে। এরপর এনবিআরের টিআইএন সেল করদাতার দেওয়া তথ্য পুনরায় যাছাই করে ই-টিআইএন ইস্যু করবে। এনবিআর অনুমোদন দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারী ই-মেইলে ই-টিআইএনের অনুলিপি পাবেন।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘১৪ জানুয়ারি এক বৈঠকের পর ই-টিকেট ভিত্তিক ই-টিআইএন দেওয়ার ক্ষেত্রে দুই স্তরে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। মূলত অসম্পূর্ণ ও ভুয়া ই-টিআইএন রোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুই স্তরে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কারণে আবেদনকারীরা কিছুটা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তবে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ডাটাবেজের সঙ্গে ই-টিআইএন সিস্টেম সংযুক্ত করা হলে তথ্য যাচাইয়ে সুবিধা হবে। তখন হয়রানিও কমবে এবং দুই স্তরে তথ্য যাচাই পদ্ধতি বাতিল করা হবে।’