কক্সবাজারে পর্যটনশিল্পে ক্ষতি ৩৬০ কোটি টাকা

Coxs-tourismলাগাতার অবরোধ আর হরতালের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে। দৈনিক ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীদের। অবরোধের ৩৬ দিনে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩৬০ কোটি টাকা।

বাধ্য হয়ে এখন অনেক হোটেল কর্মচারীকে ছুটি দিতে হচ্ছে। ছাঁটাইয়ের তালিকায় রয়েছেন অন্তত ২০ হাজার কর্মচারী।

তারকামানের হোটেল দ্য কক্স টুডের রুম ডিভিশন ম্যানেজার আবু তালেব শাহ জানান, ৩৬ দিনের অবরোধে কেবল আমাদের প্রতিষ্ঠানেই ১ কোটি ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কর্মচারীদের খাবার, বেতন ও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বেকাদায় পড়তে হচ্ছে প্রতিমুহূর্তে।

আবু তালেব শাহ আরও জানান, জেলার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ পর্যটন ব্যবসানির্ভর। পর্যটক আসলে চাল দোকানি, রিকশাচালক, শুঁটকি বিক্রেতা থেকে শুরু করে সবাই লাভবান হন। কিন্তু এখন পর্যটক নেই, এর প্রভাব প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, অবরোধের কারণে কক্সবাজার শহরের চার শতাধিক হোটেল-মোটেলের অবস্থা শোচনীয়। পর্যটক না আসায় হোটেল-মোটেলগুলোতে দৈনিক ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। অবরোধের ৩৬ দিনে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩৬০ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যাংক ঋণ রয়েছে। ব্যবসা এখন বন্ধ বললেই চলে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পর্যটনশিল্প আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।

পর্যটকদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ট্রাভেল টিউনের নির্বাহী পরিচালক বেলাল আবেদনী ভুট্টো জানান, নিরাপত্তাবেষ্টিত বাসেও পেট্রোলবোমা হামলা হচ্ছে। ফলে আতঙ্কিত-শঙ্কিত পর্যটকরা ঝুঁকি নিয়ে আসতে চাইছেন না।Coxs-tourism 22222

সরেজমিন বুধবার সৈকত এলাকা প্রায় জনশূন্য দেখা যায়। সৈকতের কিটকট ছাতাগুলো ‘শূন্য’ পড়ে আছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, শৈবাল পয়েন্ট, ডায়াবেটিক পয়েন্টেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। যেখানে পর্যটকদের ভিড়ে হাঁটা যেত না, সেখানে ফাঁকা সৈকতে বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা।

রেস্তোরাঁগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। রোদেলা রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক মিনহাজ উদ্দিন জানান, রেস্তোরাঁর ৩২ কর্মচারীর বেতনসহ দৈনিক ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। দৈনন্দিন ব্যয়ও তোলা যাচ্ছে না। পর্যটক থাকলে দৈনিক ৬৫-৭০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এখন ২-৩ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, পর্যটন এলাকায় ৮৪টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। ডাইনিং, শালবন ও জিয়া রেস্তোরাঁসহ প্রায় ৫০টি রেস্তোরাঁ ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

হোটেল জিয়া গেস্ট ইনের স্বত্বাধিকারী পর্যটন ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান জানান, রাজনৈতিক এ অস্থিরতা না কাটলে কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এটি কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর লেগে যাবে।

Coxs-tourism 33333333পর্যটনশিল্পের স্বার্থে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে সকলকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.