পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘বিদেশি’ জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকায় কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি মদদপুষ্ট হয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এদিকে মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জব্দ কালো রঙের মাইক্রোবাসটি শিল্প প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপের বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সিটি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি মদদপুষ্ট হয়েই পুলিশ সুপারের স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তারের স্ত্রী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার। তবে এ ঘটনায় যে-ই জড়িত থাকুক না কেন, তাকে খুঁজে বের করা হবে।’
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার জানিয়েছেন, ঘাতকরা মিতুকে হত্যার পর মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস ঘটনাস্থলে কয়েক সেকেন্ড থেমে মোটরসাইকেলের পিছু পিছু চলে যায়। আমরা নিশ্চিত হয়েছি ঘাতকদের ‘ব্যাকআপ’ এর জন্য ওই মাইক্রোবাসে ভারী অস্ত্র ও গ্রেনেড বহন করা হয়েছিল। কোনরকম বাধা আসলে, তা মোকাবেলা করার জন্য ওই মাইক্রোবাসটি আনা হয়েছিলো।
তিনি জানান, জব্দ করা মাইক্রোবাস আবুল খায়ের গ্রুপের মালিকানাধীন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এর চালক দাবি করেছেন মাইক্রোবাসটি আবুল খায়ের গ্রুপের। তবে সংশ্লিষ্ট শিল্পগ্রুপের অগোচরে এর চালক জঙ্গী সংশ্লিষ্ট হয়ে মাইক্রোবাসটি হত্যাকান্ডের ব্যাকআপ টিমের জন্য ব্যবহার করেছিলো কি-না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল বুধবার হাটহাজারী থেকে শিবিরের প্রাক্তন ক্যাডার আবু নছর গুন্নুকে (৪০) আটক করে পুলিশ।
এই শিবির ক্যাডার দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যে থাকলেও পাঁচ বছর আগে দেশে ফেরেন। এরপর হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদের একটি মাজারে খাদেম হিসেবে যোগ দেন তিনি। মিতু হত্যায় আবু নছর সরাসরি অংশ নিয়েছিল কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
একইদিন মিতু হত্যায় জড়িত সন্দেহে চট্টগ্রাম নগরী থেকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস চালকসহ আটক করে পুলিশ।
পুলিশের সংগ্রহে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওইদিন সকালে মিতু হত্যাকা-ের পর মোটরসাইকেলে করে তিনজন পালিয়ে যাওয়ার পরপরই একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস একই পথ দিয়ে যেতে দেখা যায়।
মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যাওয়ার ১০ সেকেন্ডের মাথায় ঘটনাস্থলে আসে মাইক্রোবাসটি। পাঁচ সেকেন্ডের মতো ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে চলা শুরু করে সেটি। পরে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে চলে যায় ওই মাইক্রোবাস।