বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আঙ্গুলের ছাপ ছাড়া কোনো ব্যক্তি এবার হজ করতে পারবেন না। জেদ্দা বিমানবন্দরে কোনো হজযাত্রীর আঙ্গুলের ছাপ না মিললে তাকে ফেরত আসতে হবে। সৌদি সরকার এ কড়াকড়ি আরোপের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। হজযাত্রীদের আঙ্গুলের ছাপ হজফ্লাইট শুরুর আগে বা ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার’ লক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় এসব আলোচনা হয়েছে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত, ধর্ম ও বিমান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পাসপোর্ট অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি মনিটরিং সভা হয়েছে। হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে আঙ্গুলের ছাপ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে এবার হজে পাঠানো যাবে না। আঙ্গুলের ছাপ না মিললে তাকে ওই বিমানেই ফেরত পাঠানো হবে। সৌদি সরকার তা স্পষ্ট করে বলেছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
সৌদি সরকার জানিয়েছে, গত হজে বাংলাদেশি হাজিদের আঙ্গুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হয়নি। সেই সুযোগে অনেকে হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে গেছেন। তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়নি। এবার ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট মাস্ট’ করা হয়েছে।
সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের আঙ্গুলের ছাপ ফ্লাইট শুরুর আগেই চেয়েছে। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন বিভাগের পক্ষে এসব আগেভাগে পাঠানো সম্ভব কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আর তা না হলে হজফ্লাইট শুরুর আগে সৌদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। তবে এ ব্যাপারে গতকালের সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজ পালন করতে যাবেন। এ হজযাত্রীদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স ৫০ শতাংশ করে পরিবহন করবে। হজযাত্রীদের ভোগান্তির প্রসঙ্গ তুলে হজ সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিমান হজযাত্রীদের লাগেজ হোটেল পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। আর সৌদি এয়ারলাইন্স সেটা করে না। ফলে লাগেজ নিয়ে হজযাত্রীদের বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে বিমানোর মতো সৌদি এয়ার লাইসেন্সকে হজযাত্রীদের লাগেজ এবার হোটেলে পৌঁছানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দেশে জঙ্গি হামলা বৃদ্ধির ঘটনায় এবার হজ ক্যাম্পে নিñিদ্র নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হজ ক্যাম্পে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। হজযাত্রীর সঙ্গে ছেলে বা নিকটাত্মীয় ছাড়া কাউকে থাকতে দেয়া হবে না।
বাংলাদেশি হাজিদের ফ্লাইট আগামী ৪ আগস্ট শুরু হয়ে চলবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর সৌদি আরব থেকে ফিরতি ফ্লাইট ১৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও খবর