টেলিটকের অনিবন্ধিত ১৮ লাখ সিম এখনও সচল!

Teletalk-SIMসরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের ৫টি মোবাইল ফোন অপারেটর ৩১ মে মধ্যরাত থেকে ২ কোটির বেশি অনিবন্ধিত সিম বন্ধ করে দিয়েছে। তবে দেশের একমাত্র সরকারি মালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটকের এখনও ১৮ লাখ অনিবন্ধিত সিম সচল রয়েছে! প্রযুক্তিগত অক্ষমতা এবং লোকবলের সীমাবদ্ধতার অজুহাতে অপারেটরটি প্রতিদিন ৫ হাজার করে অনিবন্ধিত সিম ম্যানুয়ালি বন্ধ করছে। এভাবে অনিবন্ধিত সিমগুলো বন্ধ করলে টেলিটকের সকল অনিবন্ধিত সিম বন্ধ করতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে।

বিআরটিসি’র তথ্যমতে, গত ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত টেলিটকের প্রায় ৪৩ লাখ গ্রাহক ছিল। এর মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ গ্রাহকের সিম বায়োমেট্রিকভাবে নিবন্ধন হয়েছে, বাকী প্রায় ১৮ লাখ এখনো বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হয়নি এবং এখনো চালু রয়েছে। ফলে অভিযোগ উঠেছে, এই সমস্ত অনিবন্ধিত সিমগুলো দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ যেমন অবৈধ ভিওআইপি কলে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদিকে অবৈধ কল টার্মিনেশনের বিরুদ্ধে সরকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও এখনো বিদেশ থেকে অবৈধ কল আসছে যার বেশিরভাগই রাষ্টায়াত্ত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে আসে। বিআরটিসি’র সুত্র জানিয়েছে, গত কয়েকদিন যাবৎ বিদেশ থেকে অবৈধ রুটে যে কল এসেছে, তার প্রায় ৯৫% এসেছে টেলিটকের মাধ্যমে। গত ৩১ মে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর বিআরটিসি সিম বক্সের মাধ্যমে জুন মাসের প্রথম চার দিনে প্রায় ৭৭০৯ টি অবৈধ কল শনাক্ত করেছে।

বিদেশ থেকে আসা অবৈধ কলগুলোর মধ্যে ১৬৮১, ২১৮৪, ১৮২৮ এবং ১৯২০ টি টেলিটকের মাধ্যমে আসে যেখানে অন্য অপারেটর গ্রামীণফোনের মাধ্যমে ২ টি, রবির মাধ্যমে ২ টি, বাংলালিঙ্কের মাধ্যমে ১১ টি কল আসে। এই সময়ে এয়ারটেল এবং সিটিসেলের মাধ্যমে কোন অবৈধ কল আসেনি। পিএসটিএন অপারেটর র‍্যাঙ্কসটেলের মাধ্যমে ৩ জুন ৪২ টি এবং ৪ জুন ৩৯ টি কল এসেছে।

এ ব্যাপারে ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, টেলিটক তার অনিবন্ধিত সিমগুলো এখনো চালু রেখেছে ‘যা সরকারী নির্দেশনার স্পষ্ট লংঘন। তিনি বলেন, আমি টেলিটকের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সাথে কথা বলেছি, যিনি আমার কাছে তাদের অনিবন্ধিত সিমগুলো বন্ধ করার জন্য আরো বেশি সময় চেয়েছেন। কিন্তু আমি তাদেরকে ১০ দিনের সময় দিয়েছি, কারণ আইন সবার জন্য সমান। যদি সব মোবাইল অপারেটর তাদের অনিবন্ধিত সিম সরকারী নির্দেশনায় নির্ধারিত সময়ে বন্ধ করতে পারে তাহলে টেলিটকের ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম কেন?

অন্যদিকে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন বলেন, বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে সহায়ক যন্ত্র এবং পর্যাপ্ত লোকবলের সীমাবদ্ধতার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করতে সম্ভব হয় নি। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন তাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে ব্যবহৃত যন্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে টেলিটক এবং গ্রামীণফোনের মধ্যে চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে মাত্র দুই দিন আগে। তিনি আর জানান, আমরা প্রত্যেক দিন প্রায় ৫০০০ অনিবন্ধিত সিম ম্যানুয়ালি বন্ধ করছি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.