সৌদি আরব দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নিতে আগ্রহী
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, সৌদি আরব অদক্ষ শ্রমিকের পরিবর্তে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নেয়ায় বেশি আগ্রহী। ২০১৫ সালের ফেব্র“য়ারিতে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রশিক্ষিত নারী কর্মী পাঠানো হচ্ছে। নারী কর্মীদের পাশাপাশি তার নিকট আত্মীয় পুুরুষ সদস্যদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে সৌদি আরবে পাঠানো শুরু হয়েছে। সোমবার জাতীয় সংসদে এসএম আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের মে পর্যন্ত সৌদি আরবে পাঠানো কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৩ জন। সৌদি আরবে প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠানোর জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকার মিরপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা টিটিসিতে বেসরকারি উদ্যোগে বিদেশী প্রশিক্ষকদের সহায়তায় সৌদি আরবগামী কর্মীদের জন্য বিশেষ আবাসিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ উদ্যোগ আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরে নবদিগন্তের সূচনা হয়েছে। আশা করা যায়, শিগগিরই সৌদি আরবে অধিকহারে দক্ষ কর্মী পাঠানো শুরু হবে।
বাংলাদেশী কর্মী গমনকারী দেশ ১৬১টি : মনোয়ারা বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশী কর্মী গমনকারী মোট দেশের সংখ্যা ১৬১টিতে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি, গবেষণার মাধ্যমে নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মন্ত্রী বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে বিশ্বের মাত্র ৯৭টি দেশে কর্মী পাঠানো হতো। বর্তমান সরকারের আমলে নতুন আরও ৬৪টি দেশে কর্মী পাঠানোয় বর্তমানে এ সংখ্যা ১৬১টিতে উন্নীত হয়েছে।
রিজার্ভ প্রায় ২৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার : বেগম হাজেরা খাতুনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ২৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সরকারের গৃহীত রেমিটেন্সবান্ধব পদক্ষেপের ফলে রেমিটেন্স উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদেশে অধিক হারে কর্মী প্রেরণ এবং শ্রম কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষ কর্মীদের বিদেশে চাকরিপ্রাপ্তি সহজ ও অভিবাসন ব্যয় কম এবং বেতন বেশি হয়ে থাকে। তাই সরকার অদক্ষ কর্মীর পরিবর্তে অধিকহারে দক্ষ কর্মী তৈরি ও তাদের বিদেশে প্রেরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে ৪৭টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) ও ৬টি ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টিটিসি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই আওতায় প্রথম পর্যায়ে ‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম জেলায় একটিটি ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন লাভ করেছে এবং এ প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে।
