সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
সরকারকে ভোটারবিহীন আখ্যা দিয়ে দলটি বলেছে, এই সরকার শুধু তোষামোদ করতে গিয়ে দেশের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে বাংলাদেশকে পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।
‘অবকাঠামো না থাকলেও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে নামমাত্র ১৯২ টাকায় ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়া হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন ৩৭টি নদীর পানিপ্রবাহের গতিপথ ভারতের উজানে ডাইভার্ট করে ভারতে শুকনো অঞ্চলের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন তা প্রায় সম্পন্ন। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র এই দুই বড় নদী এবং নদীগুলোর শাখা-প্রশাখা খাল দ্বারা সংযোগ করে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত পানিকে সরিয়ে নেয়ার এক বিশালাকার প্রকল্প হচ্ছে ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প। এইভাবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অভিন্ন ৩৭টি নদীকে ৩০টি খাল দ্বারা সংযোগ করা হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র থেকে প্রথমে তিস্তা ও পরে তিস্তা থেকে ফারাক্কা বাঁধের উজানে পানি আনা হবে। ফারাক্কা পয়েন্ট থেকে খাল কেটে ভারতের বিভিন্ন শুকনো অঞ্চলে নদীগুলোতে নিয়ে যাওয়া হবে। ভারতের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষ হলে বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অস্তিত্বই ভয়ঙ্কর রকমের বিকৃত হয়ে উঠবে।
‘সাগরের লোনা পানি উপরের দিকে উঠে আসবে। লবণাক্ততা ভয়ঙ্কররূপে বৃদ্ধি পাবে, চাষের জমি নষ্ট হবে। এই রকম একটি বাংলাদেশ বিধ্বংসী মহাপ্রকল্পের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের মৌনতা সম্মতিরই লক্ষণ। এ ব্যাপারে নতজানু সরকার ‘টু শব্দটি’ও করছে না, কঠোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো তো দূরে থাক।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে আনন্দবাজার পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, বাংলাদেশের ফেনী নদীর ওপর ভারত ব্রিজ নির্মাণ করছে, যাতে তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে সহজে বাংলাদেশ থেকে ভারতে মালামাল নিতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে রিজভী আরও বলেন, ‘আসলে উগ্রবাদী জঙ্গিদের উৎপাত, তাদেরকে ধরার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ নির্মম ক্র্যাকডাউন, পাইকারি হারে বিচারবহির্ভূত হত্যার বিভীষিকার ডামাডোল সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টিকে এই দিকে নিবদ্ধ রেখে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, ভৌগলিক ও পরিবেশগত অস্তিত্ব এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বিপন্ন করে তারা নিরবে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।