চার্জ বেশি, ফায়ারআই’র সঙ্গে চুক্তি নবায়ন হচ্ছে না

2016_05_30_02_06_27_rDFRtPKiHXODS6CSntAQAG4ESXbAVU_originalরিজার্ভ চুরি তদন্তে ভারতীয় নাগরিকের মালিকানাধীন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ারআইয়ের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। তদন্তের ব্যয় অনেক বেশি উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অনাগ্রহ জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ সংবাদ দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং খাতে আলোড়িত এ চুরি নিয়ে স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের চার মাসের তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি দৃশ্যমান না হওয়া এবং দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ব্যয় অনেক বেশি বলে চুক্তি নবায়নে অনাগ্রহ দেখালেও প্রকৃত বিষয় হচ্ছে ফায়ারআইয়ের কাজে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

চুরির সপ্তাহ দুয়েক পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রাকেশ আস্তানাকে ডেকে আনা হয়। তার নির্দেশনার মোতাবেকই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব কম্পিউটারে নতুন নিরাপত্তার সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়। এরপর ঘটনাটির তদন্তভার দেয়া হয় রাকেশের প্রতিষ্ঠিত ফায়ারআই নামে সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানিকে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া আদেশপত্র পাঠিয়ে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা।

বাংলাদেশ ব্যংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, নিয়োগের সময় ফায়ারআই থেকে তাদের বলা হয়েছিল ৫৭০ ঘণ্টার মধ্যে দুঃসাহসিক এ চুরির আদ্যপান্ত জানাতে সক্ষম হবে। সে অনুয়ায়ী, ফায়ারআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়। একই সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০০ মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক হিসেবে চুক্তির ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার পরিশোধ করা হয়।

চুক্তির কয়েক সপ্তাহ পর অন্তর্বর্তী এক প্রতিবেদনে ফায়ারআই তদন্তদল জানিয়েছে, হ্যাকাররা ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ঢুকে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের গোপন তথ্য চুরি করে এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাকা তোলার ভুয়া আদেশপত্র পাঠিয়ে এ জালিয়াতি করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কম্পিউটার নিরাপত্তা সিস্টেমের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরেকজন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছেন,পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানির সঙ্গে মেয়াদ নবায়নে আগ্রহি নয় এজন্য যে, নতুন করে তদন্তে ইতিবাচক কোনো ফলাফল পাওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ফায়ারআই এক বিবৃতিতে বলেছে, অর্পিত দায়িত্ব পালন শেষে আমরা চাইবো এ বিষয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে। বাংলাদেশ ব্যাংক তথা বিশ্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সামনে এ তদন্তের মাধ্যমে ফায়ারআই অনেক অনাবিষ্কৃত তথ্য তুলে ধরেছে যা আগামী দিনে সাইবার হামলা থেকে প্রস্তুতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় ওই বিবৃতিতে। একই সঙ্গে বিবৃতিতে ফায়ারআই বলেছে, ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা রাখবে কোম্পানি।

রিজার্ভ চুরি তদন্তে বিদেশি অন্য কোন সংস্থার সহায়তা চাওয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশ ব্যাংকের আছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, অভ্যন্তরীণ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকার নিয়ুক্ত তদন্ত দলের কাজ শেষে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হবে। তবে পৃথক এসব তদন্ত শেষে টামর্স অব রেফারেন্স ঠিক করে বিদেশি সহায়তা নিয়ে এগুবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ওই কর্মকর্ত আরও জানান, ব্যয়ও একটা বড় বিষয়। ফায়ারআইয়ের চার্জ অনেক বেশি। এদিকে ফায়ারআই মুখপাত্র অবশ্য বলেছে, এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তদন্তের জন্য এ চার্জ স্ট্যান্ডার্ড নয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.