কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি যদি ২২০ জন মহিলা গৃহকর্মী সৌদি আরব প্রেরণ করে থাকে তাহলে ওই এজেন্সি ২০০ জনের বেশি ২০ জন মহিলা গৃহকর্মীর বিপরীতে ২০ জন পুরুষ কর্মীসহ (আত্মীয়) মোট ৩০ জন পুরুষ কর্মী পাঠানোর কোটা পাবে।
গত সপ্তাহে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো: সেলিম রেজার সভাপতিত্বে মহিলা কর্মী প্রেরণকারী ২০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গমন ইচ্ছুক মহিলা গৃহকর্মীর নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতের লক্ষে বিদেশ যাওয়ার আগেই তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা, প্রশিক্ষণের মান ও অন্যান্য তথ্যাদি যাচাই করে যোগ্য কর্মী বাছাইয়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোর পরিচালক (কর্মসংস্থান) মো: তাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যবিশিষ্ট এবং ব্যুরোর পরিচালক (বহির্গমন) এ কে এম টিপু সুলতানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের দুটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে ওই বৈঠকে।
গতকাল সৌদি আরবে গৃহকর্মী রফতানির সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক নয়া দিগন্তকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কফিলের কাছ থেকে পুরুষ কর্মীর ভিসার কাগজ বিক্রি নিয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশী দালালচক্রগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে। একেকটি ভিসা তারা ৫ হাজার রিয়ালে বিক্রি করছে। আর আমাদের সরকার বলছে ফ্রি পাঠাতে। এসব নিয়ন্ত্রণে সরকারের এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে তারা মনে করছেন।
ওই বৈঠকে সৌদি আরবে মহিলা গৃহকর্মী পাঠানোর লাইসেন্স পাওয়া দুই শতাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের মধ্যে হিমেল এয়ার সার্ভিস, সান ওভারসিস, সানসাইন ওভারসিস, এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স রাজিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স গালফ ওভারসিস, আল হাসিব ওভারসিস, আল রাবেতা ইন্টারন্যাশনাল, মাশাআল্লাহ ওভারসিস, ওভারসিস প্রমোটারস লিমিটেড, জাস্ট ওয়ে এভিয়েশন, আল বারাকা ইন্টারন্যাশনাল, তিশা ইন্টারন্যাশনাল, খান ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, সাদিয়া ইন্টারন্যাশনাল, এস এ ট্রেডিং, পূর্বাশা এন্টারপ্রাইজ, কবির ওভারসিস ও দেলোয়ার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা বলেছেন, সৌদি আরবে গৃহকর্ম পেশায় বাংলাদেশী মহিলা কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি ২০০ জনের বেশি মহিলা কর্মী প্রেরণ করেছে সেই সব রিক্রুটিং এজেন্সির প্রেরিত মহিলা কর্মীর বিপরীতে ২০০ জনের বেশি সমসংখ্যক পুরুষকর্মী (মহিলা কর্মীর নিকটআত্মীয়, যেমন বাবা, আপন ভাই, স্বামী, ছেলে) এবং ওই সমসংখ্যক পুরুষ কর্মীর পাশাপাশি আরো অর্ধেক পুরুষ (যে কেউ) কর্মী প্রেরণের কোটা পাবেন। এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের নিজ নিজ সৌদি আরবের কাউন্টার পার্ট এজেন্সির মাধ্যমে পুরুষ কর্মী প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। ওই বৈঠকে আরো আলোচনায় উঠে আসে, যেসব মহিলা কর্মী সৌদি আরবে গেছেন তাদের স্বামী, বাবা, আপন ভাই ও ছেলে এবং অতিরিক্ত কোটার বিপরীতে অন্য যেকোনো পুরুষ কর্মী যেতে পারবেন। তবে মহিলা কর্মীর ওই সব আত্মীয়ের সম্পর্ক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে দেখা হবে। প্রয়োজনে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পক যাচাই করে নিশ্চিত হতে হবে। কোনো মহিলা কর্মী বিদেশ যাওয়ার আগে বা বিদেশ যাওয়ার পর নিয়োগকর্তা কর্তৃক কোনো প্রকার হয়রানি বা নিরাপত্তাজনিত কোনো অভিযোগ বিএমইটিতে লিখিত বা অনলাইনে দাখিল অথবা এ সংক্রান্ত তথ্য জানার বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে এজেন্সির মালিকদের জানানো হয়, নারী পুরুষ কর্মী পাঠানোর বিষয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও খবর