‘বাবা, আমরা ভালো আছি’

glগুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে শুরু জিম্মি সঙ্কটের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর সেখানে আটকে পড়া এক তরুণ ফোন করে ‘নিরাপদে’ থাকার কথা তার বাবাকে জানিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে জিম্মি সঙ্কট শুরুর পর আটকে পড়া ছেলের অপেক্ষায় রাতভর গুলশান এলাকায় অপেক্ষায় থাকা আফতাব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার খানের কাছে শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে একটি ফোন আসে।

ফোনটি ছেলে তাহমিদ খানের কাছ থেকে এসেছিল জানিয়ে শাহরিয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে ফোনে জানায়, বাবা আমরা ভালো আছি। এর পর কল কেটে যায়।”

এর আগে রাতভর উদ্বেগে থাকা এই ব্যবসায়ী বারবার ফোন করেও ছেলেকে পাচ্ছিলেন না, পুলিশের কাছ থেকেও কোনো তথ্য পাচ্ছিলেন না।

সকালে ছেলের কাছ থেকে ফোন পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য হতবিহ্ববল হয়ে ঘটনাস্থলেই পড়ে গিয়েছিলেন বলেও জানান শাহরিয়ার খান।

তবে ক্যাফের বাইরে জিম্মি স্বজনদের জন্য উদ্বিগ্ন আরও অনেক অভিভাবক রাতভর গুলশান এলাকায় অপেক্ষায় থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে তাদের কোনো খবর না পেয়ে সকালের দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন।

নজিরবিহীন এই ঘটনার অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করতে বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর মধ্যে রাতেই উদ্ধার অভিযানে গিয়ে আততায়ীদের হামলায় নিহত হন বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন ও ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।

রাতে ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল।দুই ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ প্রাণহানি রোধ ও কাজের সুবিধার্থে উৎসুক জনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেন; সরাসরি সম্প্রচার বন্ধের অনুরোধ করেন।

মূলত এর পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি সম্পর্কে কোনো তথ্য পাচ্ছিলেন না সাংবাদিক কিংবা জিম্মিদের স্বজনরা।

ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক লিটন হায়দার জানান, “প্রায় ১০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর সকাল সোয়া ৭টার দিকে অপেক্ষমাণ অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।

“তাদের কয়েকজন বলতে থাকেন, এতো লম্বা সময় পেরিয়ে গেল, ‘আমরা কোনো খবর পাচ্ছি না। আমাদেরকে ব্রিফ করা হচ্ছে না, আমরা অন্ধকারে আছি।”

এসময় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ রায় ও আব্দুল বাতেন বিক্ষুব্ধ স্বজনদের নিবৃত্ত করেন

গুলশান-২ নম্বর এলাকার ৭৯ নম্বর রোডের ওই ক্যাফেতে ২০ বিদেশি নাগরিকসহ অন্তত ৪০ জনের জিম্মি থাকার খবর দেয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বিদেশিদের মধ্যে ‘সাত ইতালীয় থাকার’ তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এলিগেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান রুবা আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে অপেক্ষায় আছেন মেয়ে অবনিতা কবীরের (১৮) খোঁজে। দুই বান্ধবীকে নিয়ে অবনিতা এই ক্যাফেতে আছেন বলে জানান তারা।

ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের নাতি ফাইয়াজও (২১) ওই ক্যাফেতে আছেন বলে তার স্বজনরা জানান। ফাইয়াজের মা সিমিন হোসেন ওই এলাকায় রয়েছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.