বৈশ্বিকভাবে টেলিযোগাযোগ খাতের প্রসার ঘটছে দ্রুত। সংশ্লিষ্ট খাতে সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। গ্রাহক চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাতটিতে নিয়মিত নতুন কোম্পানির প্রবেশ ঘটছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাতেগোনা কিছু টেলিকম অপারেটর ব্যতীত বেশির ভাগই লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে ডাটা প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ, গ্রাহক আচরণ পর্যবেক্ষণ, নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, ডিভাইস আপগ্রেড ও কনটেন্ট সরবরাহকারীরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থাত্ উল্লিখিত বিষয়গুলোর উন্নয়নের মাধ্যমে মোবাইল ভিডিও সেবার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো যেতে পারে; যা টেলিকম অপারেটরদের রাজস্ব বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। চীনভিত্তিক নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ নির্মাতা হুয়াওয়ে টেকনোলজিস কোম্পানি লিমিটেডের সাম্প্রতিক এক জরিপ প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। খবর ইটি টেলিকম।
হুয়াওয়ে প্রতিবেদনে জানায়, টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় প্রাধান্য বিস্তার করে আছে মোবাইল ভিডিও। মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় যে ট্রাফিক তার বেশির ভাগই মোবাইল ভিডিওর কারণে। টেলিযোগাযোগ খাতে ভবিষ্যতে মোবাইল ভিডিওর চাহিদা আরো বাড়বে।
বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বর্তমানে বিনোদনের স্থান অনেকাংশে দখল করে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেন্দ্রিক ভিডিও, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের লাইভস্ট্রিমিং সুবিধা এবং ভিআর হেডসেটের জন্য ধারণকৃত ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও। টেলিযোগাযোগ খাতের গ্রাহকদের কাছে আরো বেশকিছু দিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ভিডিও। তথ্যের অন্যতম উত্স এখন ভিডিও। এটিকে অনেকেই যোগাযোগের সমার্থক হিসেবেও বিবেচনা করার পক্ষে।
হুয়াওয়ের ওয়্যারলেস মার্কেটিং অপারেশন ডিপার্টমেন্টের প্রেসিডেন্ট কিউ হেং বলেন, মোবাইল ভিডিও বাজারের যে পরিসর তা অনেক বড়। এটি শিগগিরই টেলিকম অপারেটরদের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। ইন্টারনেট সেবার উল্লেখযোগ্য প্রসার ঘটেছে। বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকেও এখন ইন্টারনেট সেবার আওতায় নিতে কাজ চলছে। যদিও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোয় মোবাইল ইন্টারনেটই বেশি জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ ঘোষণার মধ্য দিয়ে মোবাইল ভিডিও সেবার প্রসার ঘটানো যেতে পারে। বিবেচনায় নেয়া উচিত গ্রাহকরা প্রকৃতপক্ষে কোন ধরনের সেবা চাইছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও ডিভাইস আপগ্রেড সুবিধার ওপর জোর দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অপারেটর কোম্পানিগুলোকে সক্রিয়ভাবে ভিডিও সেবার উন্নয়নে মনোযোগী হতে দেখেছি। উন্নত নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো নতুন ব্যবসায় মডেলে গুরুত্ব বাড়ানোয় তাদের রাজস্ব বাড়ছে এবং কনটেন্ট উত্স অর্জনের মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করছে। মোবাইল ভিডিও খাতে টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য হুয়াওয়ে উদ্ভাবন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বিক্রয় ও বিপণন-বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১ সাল নাগাদ মোবাইল ভিডিওর গ্রাহক সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ২০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের ওয়্যারলেস মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিস বিভাগের পরিচালক নিতেশ প্যাটেল বলেন, গ্রাহক-সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধির জন্য মোবাইল ভিডিও অন্যতম একটি কার্যকর হাতিয়ার। এটি সোস্যাল নেটওয়ার্ক মাধ্যমে গ্রাহককে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে সহায়ক।