জনগণের ক্ষমতায়ন হলেই এসডিজি অর্জন সম্ভব : ডেপুটি গভর্নর

2016_04_07_17_25_58_rIMfayaed4FDM9XdxJVP1lBKJjMZk5_originalজনগণের ক্ষমতায়ন হলেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।

বুধবার (৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ (বিইউপি)।

এ সময় ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে- রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। তাই সরকারের দায়িত্ব জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করা, তবেই খুব সহজে টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীলদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জনগণের ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। এতে করে টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে জঙ্গি-সন্ত্রাসের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু অর্থসন্ত্রাসীদের কথা বলা হচ্ছে না। এই অর্থসন্ত্রাসীরা সরকারকে পাহাড়াদারের মতো ঘিরে রেখেছে। সরকারকে এদের থেকে মুক্ত হতে হবে।’

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতা দিতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে। দেশ তবেই এসডিজি অর্জনে অনেকটা এগিয়ে যাবে।’

বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী পরিচালক ড. নিলুফার বানু। তিনি বলেন, ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি)-এর ৮টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বাংলাদেশ ৭টি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দরিদ্রতা অর্ধেকে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্যসেবার মানও অনেক উন্নত হয়েছে। এখান থেকে আরো এগিয়ে যাবার এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য নতুন লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। যাকে বলা হচ্ছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র এবং ক্ষুধা পুরোপুরি দূর করা।’

এ সময় ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকস-এর সভাপতি ড. খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যে সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত না করতে পারলে এসডিজি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এছাড়া জঙ্গিবাদ দমন না করলে টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। জঙ্গি দমন করতে হবে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবারসহ সকল সেক্টরকেই এগিয়ে আসতে হবে জঙ্গি দমনের জন্য। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যারা সক্ষম ব্যক্তি তাদের এগিয়ে আসতে হবে এবং সরকারকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। উন্নয়ন প্রশাসনকে জনমুখি করতে হবে।’

বৈঠকে বিআইডিএস -এর প্রফেসরিয়েল ফেলো ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এসডিজি অর্থ সংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আকর্ষণীয় সুদে ট্যাক্স ফ্রি বন্ড ছাড়তে হবে। তাহলে সরকারের অর্থের চিন্তা করতে হবে না, জনগণই অর্থের সংস্থান করবে।’

রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমেদ আল কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে অভাবনীয় উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে দেশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার জন্য আলাদা কোনো বাজেট করার প্রয়োজন নাই। সকল মন্ত্রণালয় সঠিকভাবে কাজ করলেই এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।’

তিনি আরো বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। তরুণদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম বাড়াতে হবে।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.