বগবুধবার (২৭ জুলাই) থেকে ঢাকা-টরন্টো রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে উড়োজাহাজের দুই-তৃতীয়াংশ আসনের টিকিট। ফাঁকা আছে আরও শতাধিক আসন। এসব আসনে টিকিট বিক্রি চলবে শেষ দিন পর্যন্ত। সেবার মান ভালো হলে তখন প্রতিটি ফ্লাইট যাত্রী পরিপূর্ণ হবে এবং টরন্টো ফ্লাইট পরিচালনায় বিমান সফল হবে বলে মনে করেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র জানায়, বুধবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টা ৩০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-টরন্টো রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হবে। এজন্য বিমানের বোয়িং-৭৮৭ প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখন থেকে সপ্তাহে দুদিন তথা রবি ও বুধবার ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান।
উড়োজাহাজটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাড়ে ৩টায় রওয়ানা দিয়ে তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ইস্তাম্বুলে এক ঘণ্টা বিরতি দেবে। পরে ওইদিন কানাডার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় টরন্টোতে অবতরণ করবে। সেখানে কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ওইদিনই সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে বিমান। টানা ১৬ ঘণ্টা ফ্লাই করে পরদিন রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকায় অবতরণ করবে।
বিমানের এক কর্মকর্তা জানান, এই ফ্লাইটে ২৯৮ জন যাত্রী একসঙ্গে ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে ২৭ জুলাই যে ফ্লাইট শুরু হবে, সেটিতে সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৭০টি আসনের টিকিট বিক্রি হয়েছে। ফিরতি ফ্লাইটে টিকিট কেটেছেন ১৭৫ জন। ফ্লাইট পরিচালনার আগ দিন পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। এক্ষেত্রে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিচ্ছে বিমান। এই হিসাবে ইকোনমিক ক্লাসে একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া ৯৫ হাজার টাকা আর ফিরতি টিকিট কিনলে এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৭০ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে বিজনেস ক্লাসে একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া এক লাখ ৬৪ হাজার ১০০ টাকা আর রিটার্ন টিকিট কাটলে তিন লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
আসন ফাঁকা রেখে এই বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা কতটা সফল হবে তা জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকারবলেন, ঢাকা থেকে অনেক উড়োজাহাজ টরন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর মধ্যে বিমানের এটি প্রথম যাত্রা। ৮-১০টি ফ্লাইট পরিচালনার পর যাত্রীরা যখন দেখবেন, বিমানের সেবার মান ভালো তখন এমনিতেই যাত্রী পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর, ঈদের ছুটি, বড়দিন, সামারের ছুটিতে এই রুটে যাত্রীর চাহিদা বেশি থাকে। এই সময়গুলো কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে বিমান। আশা করা যায়, টরন্টো ফ্লাইট পরিচালনায় বিমান সফল হবে।
ঢাকা-টরন্টো রুটে এটিই বিমানের প্রথম ফ্লাইট। তবে ঢাকা থেকে সরাসরি টরন্টো যাচ্ছে না ফ্লাইটটি, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে থাকছে প্রায় এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি। তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিমান চাইলে তুরস্ক থেকে যাত্রীও নিতে পারবে। তবে টরন্টো থেকে ফেরার পথে ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করবে সরাসরি।
ঢাকা-নিউইয়র্ক ও ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বেশ আগে নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ মার্চ সমীক্ষা ও প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকা-টরন্টো রুটে টেস্ট ফ্লাইট পরিচালনা করে সংস্থাটি। তখন এই ফ্লাইটে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলমসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কানাডার টরন্টো ভ্রমণ করেন। গত জুন থেকে ঢাকা-টরন্টো রুটে ফ্লাইট শুরুর ঘোষণা দেওয়া হলেও পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ২৭ জুলাই থেকেই চালু হচ্ছে ঢাকা-টরন্টোফ্লাইট।