জাতীয়করণের পরও চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় আত্মহত্যা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজালাল কলেজের ১৩ জন শিক্ষক।
বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মমতাজ বেগম বলেন, কলেজ কমিটির একটি অংশের ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে তাদের চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। তারা প্রত্যেকের চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য জনপ্রতি ২ লাখ টাকা করে ঘুষ চান বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কলেজের গভর্নিং কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ কমিটির প্রধান স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর কাছে গেলেও তিনি কোনো সমাধান দেননি।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে আমাদের সোনালি ভবিষ্যত নষ্ট হচ্ছে। চাকরি স্থায়ীকরণ না হলে আমাদের আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে বঞ্চিত শিক্ষকরা বলেন, কলেজ জাতীয়করণ করা হবে বলে অধ্যক্ষ তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। তারা সকলেই ডিগ্রি ও অনার্স পর্যায়ে ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময় নিয়োগ লাভ করেছেন। কিন্ত এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়োগ বৈধ করণের কথা বলে আরও কয়েকবার সার্কুলার দিয়ে তাদের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর আবারও তাদের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে শতাধিক প্রার্থী অংশ নিলেও সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ১৩ জন চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য মনোনীত হন। এরপর থেকেই কমিটির সভায় তাদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তে কমিটির অনেক সদস্য স্বাক্ষর করেননি। টাকা না দিলে তারা স্বাক্ষর করবেন না বলে জানালে তারা বারবার অধ্যক্ষকে তাড়া দেন। এরপর আরও ১০/১২বার মিটিং এর তারিখ করলেও কমিটির সভাপতি না আসায় কোনো মিটিং হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে তারা আরও অভিযোগ করেন, সম্প্রতি কলেজে অডিট টিম আসলে অধ্যক্ষ তাদেরকে টিমের সাথে দেখা করার সুযোগ দেননি। তিনি নিজেও তাদের ব্যাপারে টিমকে কিছু জানাননি।
তারা জানান, চাকরি স্থায়ী হওয়ার আশায় স্বল্প বেতনে এত দিন যাবৎ কাজ করে আসছেন। এখন চাকরির বয়সও তাদের নেই। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বেকায়দায় পড়ে যাবেন। ফলে তাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বঞ্চিত শিক্ষকরা হলেন- প্রভাষক মমতাজ বেগম, সৈয়দ শাহ নেওয়াজ, মুবিন উদ্দিন, মিজানুর রহমান, সেলিম মিয়া, সাহাব উদ্দিন, খলিলুর রহমান, দুলাল মিয়া, আজিজা খানম, মুর্শেদা বেগম, শামীমা আক্তার, সাইফুল ইসলাম ও মশিউর রহমান।
এ ব্যাপারে কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক টেলিফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন এ ব্যাপারে কথা বলতে হলে সরাসরি কথা বলতে হবে।