প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন সুজানগরে আ. লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

পাবনার সুজানগরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬ তম জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ আহত হননি। বুধবার দুপুর ২টার দিকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে সুজানগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন অনুসারীরা পৃথক আয়োজন করে। উপজেলা পরিষদে প্রথমে কেক কাটা শেষ করে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থক নেতা-কর্মীরা চলে যান।

পরে কেক কাটাসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির আব্দুল ওহাব ও তাঁর সমর্থকেরা। এ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জল।

অনুষ্ঠান শেষ করে কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান উজ্জল আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরগুলোতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন।

নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার পথে লাঠিসোঁটা নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের অনুসারী সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা কয়েকজনের টাকা পাওনা নিয়ে উসকানিমূলক স্লোগান দেন।

এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কামরুজ্জামান উজ্জলের অনুসারীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এতে কেউ আহত হননি।

এ বিষয়ে কামরুজ্জামান উজ্জল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন অনুষ্ঠান পালন শেষে নিজ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে আমার ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার জন্য এই অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন এলাকায় ছিলেন না। তবে, তার অনুসারীরা হামলার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছি।’

এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ বলেন, ‘ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আমার নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ সঠিক নয়।’

সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, কামরুজ্জামান উজ্জলের কর্মকাণ্ডে সুজানগরের কিছু মানুষ ঈর্ষান্বিত।

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনেও তারা এই বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে। একটা ইস্যু তৈরি করে কামরুজ্জামান উজ্জলকে সবার কাছে হেয় করার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘শুনেছি কামরুজ্জামান উজ্জল বেশ কিছু মানুষকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন।

একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ভাড়া দেননি। এ কারণে পাওনাদাররা পাওনা পরিশোধের দাবিতে তাঁকে ঘিরে রাখে। বিষয়টি উজ্জল সাহেবের পার্সোনাল কারণে। আমি এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। আর আমার কোনো অনুসারী কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, আওয়ামী লীগের দু-গ্রুপের লোকজন হট্টগোল করছে, এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.