বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ভেঙে নতুন কোম্পানিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার সুরাহা ছাড়াই দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষ হয়েছে। রোববার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর ও পিডিবি নেতাদের মধ্যে এ বৈঠক হয়।
তবে বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আলোচনা শেষ হয়নি, আলোচনা চলবে। দু’ একদিনের মধ্যে জটিলতা নিরসনে আমরা সমাধানে আসতে পারবো।
নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের শ্রমিকরা ধর্মঘট করেননি। তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছি। আশাকরি, দুই একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সমাধান হবে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পিডিবিকে হোল্ডিং কোম্পানি করার। অথবা আইন পরিবর্তন করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) আদলে কোম্পানি করার। তবে শ্রমিকরা কোনও প্রস্তাবই মানেননি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের পূর্বেই সিদ্ধান্ত ছিল পিডিবিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর এবং পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সহজীকরণের লক্ষ্যে পিডিবিকে ভেঙে কোম্পানিতে রূপান্তরিত করবো। বিশেষ করে রাজশাহী জোন ডিস্ট্রিবিউশনকে কোম্পানিতে রূপান্তরিত করবো, সেন্ট্রাল জোন হবে একটা এবং ইস্ট জোন, সাউথ জোন করা হবে। বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে এটা পরিচালিত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈঠক ব্যর্থ হয়নি। যে সমস্য সৃষ্টি হয়েছে, আগামী দু’ এক দিনের মধ্যে আমরা ঐক্যমতে আসবো। তিনি বলেন, সরকারের চিন্তা-ভাবনা আছে বিপিডিবিকে একটা সিঙ্গেল বায়ার হিসেবে থাকবে। যেসব কোম্পানি হয়েছে এবং পরবর্তীতে হবে সেগুলোকে একটি হোল্ডিং কোম্পানির আওতায় নিয়ে আসা। যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায়। অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা আরো কঠোর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে পিডিবি’র রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের ১৬টি জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (নওপাডিকো) গঠন করা হয়। ২০০৩ সালে কোম্পানি গঠনের সিদ্ধান্ত হলেও সরকার এখন তা বাস্তবায়ন করছে। সর্বশেষ ১ আগস্ট পিডিবি’র বোর্ড সভায় রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের ১৬টি জেলার পিডিবি’র স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ নওপাডিকোর কাছে হস্তান্তরের অনুমোদন হয়। এরপর থেকেই এর বিরোধীতা করে কঠোর কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা ঐক্যপরিষদ। আন্দোলনকে ঘিরে ২ আগস্ট থেকে পিডিবিতে কোনো দাফতরিক কাজ হয়নি। অচল হয়ে পড়েছে পিডিবি’র কার্যক্রম।