পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা হচ্ছে

PM1_884043026ঢাকা: পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন ও বিকাশের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। পর্যটন শিল্পের বিদ্যমান ও সম্ভ্যাব্য স্থানগুলোর পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে এ পরিকল্পনার মাধ্যমে।

বুধবার (০৪ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় পর্যটন পরিষদের তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে পরিষদের সভায় গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশকে গতিশীল করতে ২০১৬ সালকে ‘পর্যটন বর্ষ’ হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়। এক্ষেত্রে ২০১৫-২০১৮ তিন অর্থবছরে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

টুঙ্গীপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ সংলগ্ন এলাকার প্রাকৃতিক গ্রামীণ পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে এলাকাটিকে পর্যটক আর্কষক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন শিল্পকে আর্কষণীয় করতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলোকে আকর্ষণীয় করতে পারলে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করা যাবে।

দেশের মানুষকে পর্যটন বিষয়ে উৎসাহ যোগাতে ও সচেতনতা সৃষ্টির ওপর জোর দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা পর্যটনে না গেলে বিদেশিরা আসবে কেন? নিজের দেশের মানুষ যাতে পর্যটনে যাওয়ার জন্য আগ্রহী হয় সেজন্য উদ্যোগ নিতে হবে।

নদী পথগুলোকেও পর্যটক আকর্ষণীয় করার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু সমুদ্র নয়, নদীপথগুলোকেও পর্যটক আকর্ষণীয় করতে হবে।

এ জন্য সমুদ্র ক্রুজের মতো রিভার ক্রুজ পরিচালনা করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া ঐতিহ্যবাহী ও প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনা, পাহাড়, চা বাগানসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থানগুলোকে পর্যটক উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে নির্দেশনা দেন তিনি।

শুধু বিদেশি পর্যটকদের জন্য কক্সবাজারে ‘এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন’ গড়ে তোলা এবং মিরেরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ তৈরি করতে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

সুন্দরবনকে ইকো ট্যুরিজমের আওতায় এনে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার কথাও জানান।

বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করার লক্ষ্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সহজীকরণ এবং দীর্ঘমেয়াদী মাল্টিপল ভিসা ও ই-ভিসা চালু করার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।

এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় স্থাপনাগুলোকে কেন্দ্র করে ‘পর্যটন সার্কিট’ তৈরি করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

ভারতের চেন্নাই থেকে একটি নৌ-ক্রুজ বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে আন্দামান হয়ে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া হয়ে সিংগাপুরে শেষ হয়। ক্রুজে বাংলাদেশ সম্পৃক্ত হলে ক্রুজটি কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।

এ লক্ষ্যে ভারতসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌ প্রটোকল সই করতে হবে। সভায় এ বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫/আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.