বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের অর্থনৈতিক সংলাপের আয়োজক দেশ জাপান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়; যার ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারকরণে বাংলাদেশ-জাপান সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ অর্থনৈতিক সংলাপে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন। গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক, চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ: জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিবগণসহ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যানগণ, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালকগণ সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।
আর বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিাই, বিজিএমইএ, জেবিসিসিআইসহ বিভিন্ন বেসরকারি বাণিজ্য সংগঠনের সভাপতি, প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
টোকিও প্রান্তে জাপান থেকে অংশগ্রহণকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী হিরাই হিরোহাইদি। এ ছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এবং জাইকা জেটরো বাংলাদেশ অফিসের প্রধানসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেন।
এবারের সংলাপে সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মহাপরিচালক (নির্বাহী সেল ও বেসরকারি ইপিজেড), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড লজিস্টিক সেক্টরের বিভিন্ন নীতি সহায়তা এবং প্রণোদনা সম্পর্কিত সরকারি উদ্যোগগুলো উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশে অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড লজিস্টিক সেক্টরের জাপানি বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা নিয়ে ড. এফ এইচ আনসারি ও ড. এম মাসরুর রিয়াজ দুটি উপস্থাপনা দেন।
উভয়পক্ষ বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় জিটুজি ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ স্পেশাল ইকনোমিক জোনের কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য জাপানি বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
জাপানের পক্ষ হতে বাংলাদেশে জাপানের বিদ্যমান বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন সেক্টরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনিয়োগের এবং সহযোগিতার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পক্ষ হতে বক্তব্য প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এদেশে জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে জাপানকে আশ্বস্ত করা হয়।
পাশাপাশি ইতিপূর্বে জাপানি বিনিয়োগকারীগণ যে সকল বিষয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল তার বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। জাপানের পক্ষ হতে বাংলাদেশের গৃহীত কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং ভবিষ্যতেও এ অগ্রগতি অবাহত থাকবে মর্মে আশা প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জাপান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করবে মর্মে আশা প্রকাশ করে উভয়পক্ষ ৫ম বাংলাদেশ-জাপান সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ সমাপ্তি ঘোষণা করেন।