বিশ্ববাজারে আম রফতানির পথ সুগম হচ্ছে : কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ইতোমধ্যে ৪৭ কোটি টাকার রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর ফলে অচিরেই বিশ্ববাজারে দেশের আম রফতানির পথ সুগম হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রফতানিযোগ্য আমের উৎপাদন, বিপণন ও রফতানির বিষয়ে আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সভায় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা,  সংস্থাপ্রধান, আম চাষি, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের আমের অনেক চাহিদা রয়েছে। দেশে আমের উৎপাদন অনেক বেড়েছে, রফতানির সম্ভাবনাও অনেক। রফতানির ক্ষেত্রে আম নিরাপদ ও রোগজীবাণুমুক্ত, এ নিশ্চয়তা দিতে হবে। কিন্তু আমরা এখনও সেই নিশ্চয়তা দিতে পারি নি, আমাদের প্রস্তুতি চলছে। উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদন, ভ্যাপার হিট ট্রিটমেন্ট স্থাপন, আধুনিক প্যাকিং হাউজ নির্মাণ এবং কৃষক, ব্যবসায়ী, রফতানিকারকদের প্রশিক্ষণসহ নানান উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

মন্ত্রী বলেন, রফতানি বৃদ্ধি করতে পারলে আম চাষীরা ভালো দাম পাবেন, পোস্ট হার্ভেস্ট লস কমবে। একইসঙ্গে, স্থানীয় বাজারেও আরও নিরাপদ ও রোগ জীবাণুমুক্ত আম পাওয়া যাবে।

সভায় জানান হয়, বিশ্বের আম উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম। বাংলাদেশে বছরে আমের উৎপাদন প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। আম পরিবহন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ এবং উৎপাদন পর্যায়ে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় উৎপাদিত আমের ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আম রফতানি বাণিজ্য হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০১৮-১৯ সালে ৩১০ টন, ২০১৯-২০ সালে ২৮৩ টন, ২০২০-২১ সালে ১৬৩২ টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৭৫৭ টন আম রফতানি হয়েছে। আম উৎপাদনে বাংলাদেশ ৭ম অবস্থানে থাকলে রফতানিতে শীর্ষ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ থেকে প্রায় লক্ষাধিক টন আম রফতানির সম্ভবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ইংল্যান্ড, জাপান, রাশিয়াসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছে। বিশ্বে ২১ জাতের আম রফতানি হয়ে থাকে, যার অনেকগুলিই বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৭২ জাতের আম উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে জনপ্রিয় জাতগুলো হলো- খিরসাপাত, গোপালভোগ, লেংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙ্গা, আম্রপালি ইত্যাদি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের দুইটি জাত (খিরসাপাত, ফজলী) জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আমের রফতানি বাড়াতে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৪৭ কোটি টাকার রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে (২০২২-২৭)। এর মাধ্যমে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন, রফতানিযোগ্য জাতের আম বাগান সৃজন, বিদ্যমান আম বাগানে সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার (প্রুনিং ব্যাগিং ও বালাই ব্যবস্থাপনা) মানসম্মত আম উৎপাদন; কৃষক, রফতানিকারক, বাজারজাতকারী, আম পরিবহন ও কার্গো ব্যবস্থাপনায় জড়িতদের প্রশিক্ষণের কাজ চলছে ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.