হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাসপোর্ট বা বোর্ডিং পাস ছাড়াই কুয়েত এয়ারওয়েজের বিমানে উঠে পড়ে জোনায়েদ মোল্লা (১০) নামে এক শিশু।
শিশু জোনায়েদ মোল্লা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের ইমরান মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় মুকসুদপুর উপজেলাব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা ১০ মিনিটে বিমানে উঠা শিশুকে নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উড্ডয়নের আগ মুহূর্তে জানা যায়, শিশুটি এ ফ্লাইটের যাত্রীই নয়। এমনকি তার কাছে কোনো পাসপোর্ট বা বোর্ডিং পাসও নেই। এমন ভূতুড়ে ঘটনায় কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার পর তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাকে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়।
শিশু জোনায়েদ মোল্লা জানায়, সে বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠে পড়ে। সে কোনো কিছু না ভেবে শখের বশে বিমানে ওঠে। সে জানেই না বিমানে উঠতে বোর্ডিং পাস, পাসপোর্ট ও ভিসা লাগে। ভুল করে বিমানে উঠে পড়েছিল বলে জানায় জোনায়েদ।
শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লা জানান, তার ভাতিজা জোনায়েদ মোল্লা খুবই দুরন্ত। তাকে হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে বারবার পালিয়ে আসে বলে তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। তবু সে বাড়ি থেকে মাঝেমধ্যে হারিয়ে যায়। আবার একাই ফিরে আসে।
তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বিমানে ওঠার ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের ফোন করা হলে তাকে নিয়ে আসি। বর্তমানে সে বাড়িতেই আছে।’
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের থানায় ফোন করা হলে তার পরিবারকে সংবাদ দিই। পরে তারা বিমানবন্দর থানা থেকে শিশুটিকে নিয়ে আসে। বর্তমানে সে বাড়িতেই আছে।
জানা যায়, সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা ১০ মিনিটে কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি তখন (কেইউ-২৮৪) উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। প্লেনের দরজাও বন্ধ হয়ে গেছে। এ সময় ৮-৯ বছরের একটি ছেলে প্লেনের ভেতরে হাঁটাচলা করছিল। কেবিন ক্রু শিশুটিকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি পাসের সিটে বসে পড়ে। ওই সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে, কিন্তু শিশুটি সেখানে বসেই থাকে। বাবা-মায়ের বিষয়েও নীরব থাকে। এ সময় ওই যাত্রী বিষয়টি কেবিন ক্রুর নজরে আনেন। তারা ছেলেটিকে তার বাবা-মায়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু শিশুটি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা হেড কাউন্ট করেন (যাত্রীসংখ্যা গণনা করা)। তখন একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। পাইলট উড্ডয়নের আগে বিমানের দরজা খুলে শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশনা দেন। পরে ছেলেটিকে বিমান থেকে নামিয়ে সিকিউরিটির কাছে দেওয়া হয়।